মাগরিবের পর দু রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে যা সুন্নতে মুআক্কাদার অন্তর্ভুক্ত। নবিজি (সা.) সাধারণত এই সুন্নতগুলো ছাড়তেন না। সুন্নতে মুআক্কাদা নামাজ সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি দিন ও রাতে বারো রাকাত নামাজ আদায় করবে, তার জন্যে জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করা হবে। (সহিহ মুসলিম: ৭২৮)
সুনানে তিরমিজির বর্ণনায় বিস্তারিত উল্লিখিত রয়েছে ওই ১২ রাকাত নামাজ কখন কীভাবে আদায় করতে হবে। নবিজি (সা.) বলেছেন, চার রাকাত জোহরের ফরজের আগে, দুই রাকাত জোহরের ফজরের পরে, দুই রাকাত মাগরিবের ফজরের পরে, দুই রাকাত ইশার ফরজের পরে আর দুই রাকাত ফজরের ফরজের আগে আদায় করতে হবে। (সুনানে তিরমিজি: ৪১৫)
এই দুই রাকাত সুন্নত নামাজের পর মাগরিব ও ইশার মধ্যবর্তী সময়ে আরও ছয় রাকাত নফল নামাজের ফজিলতও বর্ণিত হয়েছে বিভিন্ন হাদিসে। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, কোনো ব্যক্তি মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ আদায় করলে এবং তার মাঝখানে কোন অশালীন কথা না বললে তাকে এর বিনিময়ে বার বছরের ইবাদাতের সমান সাওয়াব দেয়া হবে। (সুনানে তিরমিজি: ৪৩৫)
কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
تَتَجَافٰی جُنُوۡبُهُمۡ عَنِ الۡمَضَاجِعِ یَدۡعُوۡنَ رَبَّهُمۡ خَوۡفًا وَّ طَمَعًا ۫ وَّ مِمَّا رَزَقۡنٰهُمۡ یُنۡفِقُوۡنَ
তাদের পার্শ্বদেশ বিছানা থেকে আলাদা হয়। তারা ভয় ও আশা নিয়ে তাদের রবকে ডাকে। আর আমি তাদেরকে যে রিয্ক দান করেছি, তা থেকে তারা ব্যয় করে। (সুরা সাজদা: ১৬)
অনেকের মতে এ আয়াত মাগরিব ও ইশার মধ্যবর্তী নফল নামাজের কথা বলা হয়েছে। আনাস (রা.) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, অর্থাৎ তারা মাগরিব ও ইশার মাঝে জেগে থাকে এবং নফল নামাজ আদায় করে। (সুনানে আবু দাউদ: ১৩২১)
নবিজি (সা.) ও তার সাহাবিরা এ সময় নফল নামাজ আদায় করেছেন বলে বর্ণিত রয়েছে। হুজাইফা (রা.) বলেন, আমি একদিন নবিজির (সা.) সাথে মাগরিবের নামাজ আদায় করলাম। মাগরিবের পর তিনি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে লাগলেন এবং ইশা পর্যন্ত তিনি নামাজ পড়লেন। (মুসনাদে আহমদ: ২২৯২৬)
এই নফল নামাজকে ‘সালাতুল আওয়াবীন’ বা তওবাকারীদের নামাজ বলা হয়। যেহেতু এই নামাজ আল্লাহর ক্ষমা পাওয়ার কারণ। গাফলত বা উদাসীনতার সময় পড়া হয় দেখে এই নামাজকে ‘সালাতুল গাফলাহ’ বা উদাসীনতার সময়ের নামাজও বলা হয়।
স্বদেশ প্রতিদিন/এমটি