বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪
গ্রহজনিত জরুরী অবস্থা ঘোষণার বাস্তবায়ন দাবি তরুণদের
স্বদেশ ডেস্ক
প্রকাশ: সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ২:৫০ পিএম আপডেট: ২৭.০৯.২০২১ ২:৫১ PM
গ্রহজনিত জরুরী অবস্থা ঘোষণার বাস্তবায়ন দাবি তরুণদের

গ্রহজনিত জরুরী অবস্থা ঘোষণার বাস্তবায়ন দাবি তরুণদের

জাতীয় সংসদে গৃহীত গ্রহজনিত জরুরী অবস্থা ঘোষণার বাস্তবায়ন এবং শিক্ষাক্রমে জলবায়ুকে গুরুত্ব দেয়ার দাবি তুলেছে বাংলাদেশের তরুণরা। শুক্রবার এই ঘোষণার ৬১১তম দিনে (২৪ সেপ্টেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংলাপে তরুণরা এ দাবি তোলেন।

জলবায়ু কর্মী আরুবা ফারুকের সঞ্চালনায় এই আন্তঃপ্রজন্ম সংলাপে সভাপতিত্ব করেন জলবায়ু ও পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আইনুন নিশাত।

ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের সমন্বয়ক সোহানুর রহমান, তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ, বিদ্যুৎ ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য প্রফেসর আনু মুহাম্মদ, বাংলাদেশ পরিবেশবাদী আইনজীবি সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অরলা মারফি , সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর অনো ভ্যান মানেন, আইইউসিএন বাংলাদেশ জাতীয় কমিটির চেয়ারপারসন অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, বাংলাদেশে সেভ দ্য চিলড্রেনের ইন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট কোয়ালিটি ডিরেক্টর রিফাত বিন সাত্তার, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের যুব উপদেষ্টা প্যানেলের সদস্য রাফসান জানি সৌরভ , অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের ইয়ং পিপল ম্যানেজার নাজমুল আহসান প্রমুখ এই সংলাপে প্যানেল আলোচক  হিসেবে অংশ নেন।

সুচনা বক্তব্যে  ১৫-বছর-বয়সী পিটিশনার আরুবা ফারুক বলেন, "পিটিশিনটিতে গণসাক্ষর করার সময়  শেষ হয়ে গেলেও, এই গ্রহ জনিত জরুরি অবস্থার বাস্তবায়নে আমাদের এই আন্দোলন  এখনই শেষ নয়।  আমরা আগামীতেও আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো যতো দিন না এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়িত হচ্ছে।" 

এর পর ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস এর সম্নয়ক সোহানুর রহমান এই জরুরী অবস্থা ঘোষণার পটভূমি এবং কিভাবে তরুণদের দাবি সংসদে একটি বিল হিসেবে ঘোষণা পায় তা তুলে ধরেন । কিন্তু তার আফসোস সরকার এখনো পর্যন্ত এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নে কোনো রূপরেখা গ্রহণ করেনাই এবং এর পর ও সরকার বিভিন্ন জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক প্রকল্প এর সাথে যুক্ত হচ্ছে এখনো।  তার মতে,  "দুঃখজনক হলেও এটা সত্য যে বাংলাদেশ সরকার প্লানেটোরি ইমার্জেন্সি ঘোষণা করার পরও ২০টি  কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এবং এর মধ্যে বেশিরভাগই উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত। যেমন বরগুনা, মাতারবাড়ি, রামপাল,বাশঁখালী,চট্টগ্রাম । ২০২০ সালে কোভিড  মহামারীর মধ্যে  আমরা তরুণরা বিভিন্ন ডিজিটাল ফোরামে যুক্ত হই এবং দূষণকারী দেশগুলোকে আমরা এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ না করার জন্য আন্দোলন করি,আমরা তাদের স্পষ্ট বলি যে বাংলাদেশে কয়লার ডাম্পিং স্টেশন তৈরী করা যাবেনা । তারপর বিশ্বব্যাপী কয়লার দামও বেড়ে যায়। " 

তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ সরকারের বিভিন্ন জীবাষ্ম জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গুলোর স্থানীয় সমস্যা গুলো তুলে ধরেন। তিনি মনে করেন উন্নয়ন প্রকল্প গুলো আমাদের বনভূমি গুলো ধ্বংস করছে এবং জনগণ এর সুফল প্রকৃত ভাবে পাচ্ছেনা ।   বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য  জ্বালানির গুরুত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন , "বাংলাদেশের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে  স্থানন্তরিত হওয়া অনেক সহজ।  কারণ বাংলাদেশে বায়ুশক্তি, সৌরশক্তি ,বর্জ্য  পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। এগুলো সম্পূর্ণ  অসীম সম্পদ।  এগুলোকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ তৈরী করা সম্ভব "।

অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর,সভাপতি , বাংলাদেশে আইইউসিএন জাতীয় কমিটি, মনে করেন এই ক্রান্তিকালে  জলবায়ু নিয়ে তরুণদের কার্যক্রম সত্যি আশা জাগানোর মতো। আরুবার পিটিশন নিয়ে তিনি বলেন, "তরুণরা তাদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার হচ্ছে।  আপনাদের এই উদ্যোগকে আমি যেমন সমর্থন করেছি, তেমনি  আমি মনে করি আমাদের সবাইকেই এর সাথে আরো বেশি একাকীত্বতা প্রকাশ করতে হবে।”  এই সময়ে, তিনি আমাদের বন, জলাশয়, পাহাড়, জীববৈচিত্র্য এবং বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা করেন।

সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অনো ভ্যান মানেন বলেন যে , "নীতিনির্ধারকদের উচিত পর্যাপ্ত সময় দিয়ে পরবর্তী প্রজন্মের কথা শোনা।  কারণ বর্তমান প্রজন্মের চেয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেই জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বেশি সামলাতে হবে । "  

সেভ দ্যা চিলড্রেন বাংলাদেশের ডিরেক্টর  রিফাত বিন সাত্তার বলেন, আমরা ব্যর্থ  হচ্ছি জলবায়ুর জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে এবং এজন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিরাট হিমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছি। তিনি বলেন, "জলবায়ু পরিবর্তনের বহুমাত্রিক প্রভাব মোকাবেলা পরবর্তী প্রজন্মকে আঁখি  হিসেবে প্রস্তুত করতে হবে আমাদের। আর এর জন্য আমাদের পাঠক্রমে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে আরো বিস্তারিত আলোচনা আসতে হবে " 

একশনএইড বাংলাদেশের ম্যানেজার-ইয়াং পিপল নাজমুল আহসান মনে করেন, আরুবার কার্যক্রমের মাধ্যমে অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছে জলবায়ু সুবিচার আন্দোলনে। তার মতে আমাদের তরুণদের কণ্ঠ আন্তজার্তিক কপ পর্যায়ে তুলে নিয়ে যেতে হবে জলবায়ু সুবিচার আদায়ে।

সংলাপটিতে আরও উপস্থিত ছিলেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অরলা মারফি উপস্থিত ছিলেন।  তিনি বলেন, "এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়। আমাকে প্রায়ই কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু আমি যা শুনতে চাই তা হল তরুণরা আমাদের কাছ থেকে কি আশা করে।"  তিনি তার বক্তব্যের মূল্যবান সময় প্যানেলের আরেক তরুণ প্রতিনিধি রাফসান জানি সৌরভ এর কাছে  তুলে দিয়ে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

স্বদেশ প্রতিদিন/নিশাদ

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






● সর্বশেষ সংবাদ  
● সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
অনুসরণ করুন
     
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী
স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়া লিমিটেড -এর পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক আবরণ প্রিন্টার্স,
মতিঝিল ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ১০, তাহের টাওয়ার, গুলশান সার্কেল-২ থেকে প্রকাশিত।
ফোন: +৮৮০২-৮৮৩২৬৮৪-৬, মোবাইল: ০১৪০৪-৪৯৯৭৭২। ই-মেইল : e-mail: swadeshnewsbd24@gmail.com, info@swadeshpratidin.com
● স্বদেশ প্রতিদিন   ● বিজ্ঞাপন   ● সার্কুলেশন   ● শর্তাবলি ও নীতিমালা   ● গোপনীয়তা নীতি   ● যোগাযোগ
🔝