রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
ই-সিগারেট কতটা ক্ষতিকর, জেনে নিন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশ: সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১১:২১ AM আপডেট: ১২.০২.২০২৪ ১:০৭ PM
বর্তমান সময়ে তরুণদের ই-সিগারেট গ্রহণের প্রবণতা বাড়ছে ব্যাপক হারে। অনেকে সাধারণ সিগারেটের বিপরীতে হাতে তুলে নিয়েছেন ভ্যাপ। তাদের দাবি, সাধারণ সিগারেটের চেয়ে ক্ষতি কম ই-সিগারেটে। বেঁচে যায় খরচও। এমন এক থেকে দুটি যুক্তিই অনেককে ই-সিগারেট হাতে তুলে নিতে উৎসাহ যোগাচ্ছে। কিন্তু আসলেই কি তাই? 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ সিগারেটের চেয়ে ক্ষতি কম এমন ভুল বার্তা প্রচার করে তরুণদের আসক্ত করে তোলা হচ্ছে ই-সিগারেটে, যা পরবর্তীকালে অন্যান্য মাদকের প্রতি আসক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্রপেলিন গ্লাইসল, গ্লিসারিন, পলিইথিলিন গ্লাইসল, নানাবিধ ফ্লেভার ও নিকোটিনে সমৃদ্ধ ই-সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকে অতি সূক্ষ্ম রাসায়নিক কণা, যা ভীষণ ক্ষতিকর। ই-সিগারেটে অস্তিত্ব আছে ক্যান্সার উৎপাদনকারী রাসায়নিক, ফরমাল ডিহাইড এবং এসিটেল ডিহাইডেরও। ই-সিগারেটের রাসায়নিক নিকোটিনের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার হতে পারে মৃত্যুর কারণও।
 
ডিভাইস নির্ভর ই-সিগারেটও নিকোটিন নির্ভর। আর তাই বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এটি ব্যবহারে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৭১ শতাংশ, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৫৯ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়া জাপানে পরিচালিত এক গবেষেণায় দেখা গেছে, ই-সিগারেট সাধারণ সিগারেটের থেকেও ১০ গুণ বেশি ক্ষতিকর।
 
মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ক্যান্সার উৎপাদনকারী বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থও ই-সিগারেটে পাওয়া গেছে। ই-সিগারেট থেকে বের হওয়া ক্ষতিকর ধোঁয়াটা ফ্রি রেডিক্যালস এবং ফুসফুসে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। হিটিং এলিমেন্ট যে তরল জুসের মতো থাকে, সেটা এরোসলে রূপান্তর হয়। আর এই হিটিং এলিমেন্টের ফলে বিষক্রিয়ার পথটা সুগম হয়। ওইটার মধ্যে বিভিন্ন বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে তরুণদের ওপর পরিচালিত কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, তাদেরকে ই-সিগারেট দেয়ার পর তাদের ফুসফুস এবং হৃদপিণ্ডের ওপর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে। অর্থাৎ, সেখানে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়েছে। আর তারা পরবর্তীকালে নানা ধরনের রোগাক্রান্ত হয়েছেন।  
 
শুধু সাধারণ সিগারেট ছাড়ার উদ্দেশ্যেই নয়, উঠতি বয়সি অনেক তরুণ-তরুণী ফ্যাশনের অংশ হিসেবেও ঝুঁকে পড়ছেন ই-সিগারেটে, যা এক সময় তাদের টেনে নিচ্ছে সাধারণ সিগারেট এমনকি মাদকের জগতে। ই-সিগারেটের সম্ভাব্য ক্ষতির দিক বিবেচনায় এরই মধ্যে আর্জেন্টেনা, ব্রাজিল, কম্বোডিয়া, মালোয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভারতসহ বিশ্বের অন্তত ৪৭টি দেশ নিষিদ্ধ করেছে ই-সিগারেট। এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশেরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের সময় এসেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
 
এ বিষয়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, গোড়াতেই এটা নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। অনেক দেশেই এটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমরাও চাই, গোড়া থেকেই এটা বন্ধ করা দরকার।
 
সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ২০৪০ সালের মধ্যে মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে এখনই লাগাম টানতে হবে ই-সিগারেটে।

/এমএ/

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






● সর্বশেষ সংবাদ  
● সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
অনুসরণ করুন
     
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী
স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়া লিমিটেড -এর পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক আবরণ প্রিন্টার্স,
মতিঝিল ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ১০, তাহের টাওয়ার, গুলশান সার্কেল-২ থেকে প্রকাশিত।
ফোন: +৮৮০২-৮৮৩২৬৮৪-৬, মোবাইল: ০১৪০৪-৪৯৯৭৭২। ই-মেইল : e-mail: swadeshnewsbd24@gmail.com, info@swadeshpratidin.com
● স্বদেশ প্রতিদিন   ● বিজ্ঞাপন   ● সার্কুলেশন   ● শর্তাবলি ও নীতিমালা   ● গোপনীয়তা নীতি   ● যোগাযোগ
🔝