হত্যাকাণ্ডের দশ বছর পর বগুড়ায় শিক্ষক আব্দুল বাকী নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলায় ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৫০ জনকে। এ ঘটনায় নিহত বাকীর বাবা ইয়াকুব আলী গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বগুড়া সদর থানায় মামলাটি করেন।
নিহত আব্দুল বাকী শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি এলাকার ইয়াকুব আলীর ছেলে এবং তৎকালীন বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক ছিলেন।
বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইহান ওলিউল্লাহ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বর্ণিত আসামিরা হলেন- সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বেনজির, চন্দন দাস, বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল রাজী জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক মাশরাফি হিরো, সাবেক সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস, সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার, ছাত্রলীগ নেতা আসাদুর রহমান আসাদ, বগুড়া জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশিষ পোদ্দার লিটন, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু, জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি সজীব সাহা, ছাত্রলীগ নেতা স্বপন সরকার, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর কুমার রায়, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আতাউর রহমান আতা, সাবেক ছাত্রনেতা মশিউর রহমান মন্টি, মুরাদ হোসেন, যুবলীগ নেতা আনন্দ চন্দ্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র দাস, নুরুল আমিন শিশির এবং খুররম।
নিহত আবদুল বাকীর বাবা বাদি ইয়াকুব আলী মামলার আর্জিতে উল্লখ করেন, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আবদুল বাকীর ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারি বিয়ের দিন ধার্য্য ছিল। ২১ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাসরঘর সাজানোর ফুল কিনতে সাতমাথা ফুলপট্টিতে যান শিক্ষক বাকী। এসময় উল্লেখিত নামীয় আসামিরা এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫০জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাকীকে ঘিরে ধরে এবং এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে হত্যা করে। এসময় শুভাশীষ পোদ্দারের হুকুমে আসামি বেনজীর হত্যার উদ্দেশ্যে বার্মিজ চাকু দিয়ে আবদুল বাকীকে ছুরিকাহত করেন। পরে অন্য আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরী ছুরিকাহত এবং রড-লাঠি দিয়ে আবদুল বাকীর মাথায় আঘাত করেন। এসময় রক্তাক্ত জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে অন্য আসামিরা লাঠি ও রড দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার বাদী ইয়াকুব আলী বলেন, এ ঘটনায় তৎকালীন সময়ে পুলিশ নিহতের বাবার স্বাক্ষর একটি সাদা কাগজে নিয়ে মরদেহ হস্তান্তর করেছিল। সেই সময় আমি বগুড়া সদর থানায় মামলা দায়ের করেছিলাম। কিন্তু আসামিরা সরকারদলীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী হওয়ার কারণে আমাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মামলা চালাতে দেয়নি। বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় না থাকায় ১০ বছর পর আবারো মামলা দায়ের করেছি।
বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, ২০১৪ সালে আব্দুল বাকী নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে ১৮জনের নাম এবং অজ্ঞাতনামা ৫০জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় আসামিদের ধরতে ইতোমধ্যে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
স্বদেশ প্রতিদিন/এমআর