ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে স্বর্ণা রানী নামে এক কিশোরী নিহতের ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভারতীয় আগ্রাসন ও সীমান্তে হত্যাকান্ড বন্ধ করতে হবে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পরবর্তীতে এমন ঘটনা ঘটলে ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও করারও হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
এসময় ‘ভারতীয় আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ভারতীয় পণ্য, বয়কট বয়কট’, ‘শিশুদের হত্যা হলে, সেভেন সিস্টার্স থাকবে নারে’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দিব না’, ‘দিয়েছিতো রক্ত, আরও দিব রক্ত’ ও ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’সহ নানা স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ফুয়াদ রাতুল বলেন, 'ফেলানী থেকে স্বর্ণা পর্যন্ত ভারতীয় সীমান্তে কোনো হত্যাকাণ্ডের কথাই ভুলিনি। কিছুদিন আগেও তারা ডুম্বুর বাঁধ খুলে দিয়ে আমাদের হত্যা করেছে। এটিও একধরনের কাঠামোগত নিপীড়ন। এই নিপীড়ক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।'
সমাবেশে একাত্মতা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘ভারত যেভাবে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড চালায় পৃথিবীর আর কোনো সীমান্তেই এ রকম হত্যাকাণ্ড চালানো হয় না। আমরা কোনোভাবেই আর এ রকম হত্যাকাণ্ড মেনে নেব না। আমরা জনগণ রুখে দিতে প্রস্তুত আছি।’
এছাড়া সীমান্তে হত্যা শূন্যতে নিয়ে আসতে ভারতকে চাপ প্রয়োগ করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতেখারুল আলম মাসউদ বলেন, ‘পৃথিবীর বহু দেশেই সীমান্ত আছে। আগে আমাদের সীমান্তের এ পরিস্থিতি ছিল না। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে তারা এই ঘৃণ্য কাজের সাহস করেছে।’
পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মারুফের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিভিন্ন বিভাগের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত রোববার রাতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার লালারচক সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে স্বর্ণা রানী প্রাণ হারায়। পরে বিএসএফ তার লাশ নিয়ে যায়। পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের বাসিন্দা পরেন্দ্র দাসের মেয়ে স্বর্ণা রানী। সে স্থানীয় নীরদ বিহারী উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত।
স্বদেশ প্রতিদিন/এমআর