রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
পাঁচ মামলায় খালাস পেলেন খালেদা জিয়া
খালেদা জিয়ার অন্য মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি চায় বিএনপি
উমর ফারুক
প্রকাশ: বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১:৫৯ পিএম
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্য এবং ভুয়া জন্মদিন উদযাপনের অভিযোগে আওয়ামী লীগের আমলে দায়ের হওয়া মানহানির পাঁচ মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। 

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. তোফাজ্জল হোসেন একটি মামলায় এবং অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. মাহাবুল হক অপর চারটি মামলায় তাকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। এ ছাড়াও বেগম খালেদা জিয়ার নামে অন্য সবগুলো মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি চায় বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নামে দুর্নীতি ও নাশকতাসহ মানহানীর ৩৭ টি মামলা হয়। বিগত দেড় দশক আইনি লড়াই চালিয়ে আসছেন বেগম খালেদা জিয়া। 

মামলাগুলো রাজনৈতিক উদেশ্যপ্রনোদিতমুলক ও মিথ্যা মামলা বলে আইনজীবীরা দাবি করেন। এরপরও বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায় দেন আদালত। জেলে নেওয়া হয় তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। তবে, গত ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যূত্থানের পর বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে মামলাকার্যক্রম পরিচালনা করে। এতে একের পর এক মামলা থেকে খালাস পান বেগম খালেদা জিয়া। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল তিনি মানহানির ৫ মামলায় খালাস পান। 

জানা যায় যে, মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির চারটি মামলা করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী। বাকি একটি মামলার বাদী সাংবাদিক গাজী জহিরুল ইসলাম। মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রনোদিত হয়ে মামলাগুলো করায় অবিলম্বে খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে আবেদন করেছিলেন তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। তবে গতকাল রায়ে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের গত ৩ অক্টোবর ২০১৮ তারিখের আদেশে নথি বিচার নিষ্পত্তির জন্য অত্র আদালতে বদলি হয়ে আসে এবং তারপর থেকে বাদী আসেননি। বাদী মামলার বিষয়ে আগ্রহ হীন মর্মে প্রতীয়মান হয়। তাই মামলার শুনানি মুলতবি রাখার সুযোগ নেই এবং এই কারণে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৭ ধারার বিধান মতে আসামিদ্বয়কে খালাস দেওয়া হয়। এ মামলায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে আরেক আসামি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনিও খালাস পেয়েছেন। মো. মাহাবুল হকের আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সামাদুল কবির বলেন, মামলার বাদী এ বি সিদ্দিকী দীর্ঘদিন আদালতে উপস্থিত হননি, তাই খালেদা জিয়াকে খালাস দেওয়া হয়েছে।  

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ৫ বছরের সাজা হলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যেতে হয় খালেদা জিয়াকে। দুদকের আপিলে ওই বছরেরই অক্টোবরে হাইকোর্ট তার সাজা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে। একই মাসে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলাতেও সাজার রায় হয় খালেদা জিয়ার। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন তিনি।

২০২০ সালের ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হচ্ছিল। 

গণআন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৭ আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশে মুক্তি পান খালেদা জিয়া।

কোন মামলা কবে : 
জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে একটি মানহানির মামলা করেন। ওই মামলায় মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ আনা হয় খালেদা জিয়া ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর ঢাকা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে একটি আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া দাবি করেছিলেন যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘স্বাধীনতা চাননি’, বরং তিনি ‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন’। এছাড়া শহীদদের সংখ্যা নিয়ে তিনি ‘বিতর্কিত মন্তব্য’ করেন। এ মামলায় বাদী এ বি সিদ্দিকী ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন আসামিদের কাছ থেকে। 

এ বি সিদ্দিকী আরেকটি মামলা করেন ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর। অভিযোগে বলা হয়, খালেদা জিয়া ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর ঢাকার শাহবাগের ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে হিন্দু সম্প্রদায়ের শুভ বিজয়া অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিরুদ্ধে ‘উস্কানিমূলক’ বক্তব্য দেন, যা ‘ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টি’ করে এবং ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ করে। খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে আওয়ামী লীগকে ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশধারী বলেন এবং অভিযোগ করেন যে দলটি ধর্মহীনতায় বিশ্বাসী। এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগকে জবরদখলকারী সরকার বলেন এবং হিন্দুদের সম্পত্তি দখল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলার অভিযোগ তোলেন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। 

২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়া এবং তার প্রয়াত স্বামী সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে মানহানি এবং ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ করে আরেকটি মামলা করা হয়। এ বি সিদ্দিকী ওই মামলায় জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবি করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, খালেদা জিয়া ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত-শিবিরের সাথে জোট করে সরকার গঠন করেন এবং তাদের মন্ত্রী ও এমপি হিসেবে নিয়োগ দেন, যা বাংলাদেশের মান-সম্মানকে ক্ষুণœ করেছে। 

গত ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারিতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন এ বি সিদ্দিকী। ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৬ সালেন ৩১ ডিসেম্বরে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বর্তমান সরকার সম্পর্কে ‘মানহানিকর বক্তব্য’ দেন। 

খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ভুল তথ্য উপস্থাপন করে তার মানহানি করেছেন এবং জাতির পিতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে যুবসমাজের কাছে তাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছেন। এছাড়া খালেদা জিয়া বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য দিয়েছেন যা দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। খালেদা জিয়ার নামে আরেকটি মামলা হয় ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট। ঢাকার একটি আদালতে এই মামলাটি করেন সাংবাদিক গাজী জহিরুল ইসলাম। 

মামলার অভিযোগে বলা হয়, খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ অগাস্টে জাতীয় শোক দিবসে তার ‘ভুয়া জন্মদিন’ উদযাপন করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি ‘অশ্রদ্ধা’ প্রদর্শন করছেন। মামলায় বাদী বলেন,খালেদা জিয়া বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন তারিখে তার জন্মদিন পালন করে দেশকে বিভ্রান্ত করছেন এবং জাতির চেতনার সাথে প্রতারণা করছেন। 

সূত্রমতে, ১৩টি মামলা হয়েছে ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে জরুরী অবস্থার সময়ে অর্থাৎ ১/১১ পরবর্তী প্রেক্ষাপটে। বাকিগুলো দায়ের করা হয় পরবর্তী বিভিন্ন সময়। মামলাগুলোর মধ্যে পাঁচটি দুর্নীতি মামলা, চারটি মানহানির মামলা ও একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা রয়েছে। বাকি মামলাগুলো হয়েছে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার অভিযোগে। 

সেসব মামলাগুলোর হচ্ছে  নাইকো দুর্নীতি মামলা : 
কানাডার জ্বালানি কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলণের চুক্তি করে রাষ্ট্রের প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকা ক্ষতি করার অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় এ মামলা দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। বর্তমানে মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এ বিচারাধীন। গত বছরের (২০২৩) ১৯ মার্চ মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান। এরপর গত ২৩ মে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথমদিন মামলার বাদী দুদকের সাবেক সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম সাক্ষ্য দেন। তবে এ মামলায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। মামলাটি উচ্চ আদালতে শুনানির জন্য থাকায় আপাতত সাক্ষ্যগ্রহণ হচ্ছেনা।

গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা :
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী চার-দলীয় জোট সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করেন। মামলার পর দিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেফতার করা হয়। পরের বছরের ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। 

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা :
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। ওই বছর ৫ অক্টোবর খালেদা জিয়াসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।

রাজধানীর দারুস সালাম থানায় ১১টি মামলা :
রাজধানীর গাবতলী বালুর মাঠ ও মিরপুর মাজার রোড সংলগ্ন এলাকায় ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত যানবাহন ভাঙচুর, পুলিশের কাজে বাঁধাদানসহ নাশকতার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দারুস সালাম থানায় ১১টি মামলা হয়। ঢাকার বকশীবাজারে বিশেষ জজ আদালতে মামলাগুলো বিচারের জন্য উঠলেও হাইকোর্টের আদেশের ফলে এর কার্যক্রম বর্তমানে স্থগিত রয়েছে।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় ৪টি মামলা :
২০১৫ সালের জানুয়ারিতে পেট্রোল বোমা দিয়ে চারজনের গায়ে অগ্নিসংযোগ, হত্যা, ও হতাহতের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট চারটি মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলাগুলোও হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত হয়ে আছে।

কুমিল্লায় ৩টি মামলা :
২০১৫ সালের ২৫শে জানুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামের হায়দারপুল এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যানে অগ্নিসংযোগ ও আশপাশের বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি, বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে একটি এবং একটি হত্যা মামলা হয়। তিনটি মামলাই অভিযোগগঠন শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ।

বিএনপি-জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোটের ডাকা লাগাতার হরতাল-অবরোধ চলাকালে ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী নৈশকোচে দুর্বৃত্তদের নিক্ষেপ করা পেট্রোল বোমায় ৮ যাত্রী পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় খালেদা জিয়া ও বিএনপির ৫৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। চৌদ্দগ্রাম থানার এস আই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় ৫৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়।

রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা :
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী। ঢাকার বকশীবাজারে বিশেষ জজ আদালতে চলমান এ মামলাটির কার্যক্রমও হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে।

পঞ্চগড়ে নাশকতার মামলা :
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা ও নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে হুকুমের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মামলাটি দায়ের করেন বোদা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম সোহাগ।

গুলশানে বোমা হামলার অভিযোগে মামলা :
নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের মিছিলে ২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন হামলার ঘটনায় খালেদা জিয়াকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতা ইসমাইল হোসেন। ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি পুলিশের প্রতিবেদন দাখিলের অপেক্ষায় রয়েছে।

ঋণ খেলাপি মামলা :
সোনালী ব্যাংক খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ও ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে মামলা করে। আরাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ার পর ওই মামলায় খালেদা জিয়াকে পক্ষ করা হয়। ২০১৩ সালের ২রা অক্টোবর ৪৫ কোটি ৫৯ লাখ ৩৭ হাজার ২শ’ ৯৫ টাকা ঋণ খেলাপির অভিযোগ তুলে ঢাকার অর্থঋণ আদালতে এ মামলাটি করেন সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ১ম অর্থঋণ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফাতেমা ফেরদৌস এ মামলায় বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলাটি উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত রয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রায় দেড় মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ২১ আগস্ট (বুধবার) বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে ওই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছান তিনি। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসের পাশাপাশি ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস ছাড়াও হৃদরোগ, ফুসফুস, কিডনিসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। গত চার বছরে বেশ কয়েকবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। এরআগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন লিভার বিশেষজ্ঞ এনে তার লিভারে অস্ত্রোপচারও করা হয়।

স্বদেশ প্রতিদিন/এমআর

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






● সর্বশেষ সংবাদ  
● সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
অনুসরণ করুন
     
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী
স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়া লিমিটেড -এর পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক আবরণ প্রিন্টার্স,
মতিঝিল ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ১০, তাহের টাওয়ার, গুলশান সার্কেল-২ থেকে প্রকাশিত।
ফোন: +৮৮০২-৮৮৩২৬৮৪-৬, মোবাইল: ০১৪০৪-৪৯৯৭৭২। ই-মেইল : e-mail: swadeshnewsbd24@gmail.com, info@swadeshpratidin.com
● স্বদেশ প্রতিদিন   ● বিজ্ঞাপন   ● সার্কুলেশন   ● শর্তাবলি ও নীতিমালা   ● গোপনীয়তা নীতি   ● যোগাযোগ
🔝