দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে কমিউনিটি ডিজিটাল স্টোরি টেলিং ফেস্টিভ্যাল (সিডিএসটিএফ)। আগামী ১৬ এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি দুই দিনব্যাপী ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা, মিডিয়া এবং যোগাযোগ বিভাগ এই ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করছে।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সিডিএসটিএফ এর সমন্বয়ক আলিফেন্নেসা আলিফ, সাবমিশন ম্যানেজার সাদমান ইসলাম, পিআর ম্যানেজার মুহাম্মদ আসি্ফ উল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে সাদমান ইসলাম বলেন, ‘সিডিএসটিএফের মূল উদ্দেশ্য দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের সুবিধাবঞ্চিত, পিছিয়ে পড়া, খেটে খাওয়া, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর না বলা গল্প তুলে ধরা। এসব গল্প বরাবরই মূলধারার গণমাধ্যমে উপেক্ষিত হয়ে আসছে, যা শিক্ষার্থীরা এই ফেস্টিভ্যালের মাধ্যমে মুঠোফোন ব্যবহার করে তুলে ধরবে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. লিজা শারমিন, সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক আফতাব হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক ও ফেস্টিভ্যালের উপদেষ্টা ড. কাবিল খানসহ বিভাগের শিক্ষক কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা।
‘এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি’ থিমকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীরা যথাক্রমে, উন্মুক্ত, সাংবাদিকতা, এক মিনিট এবং ডিআইইউ বেস্ট কমিউনিটি গল্প বিভাগে নিজেদের বানানো অসাধারণ চলচ্চিত্রগুলো জমা দিয়েছেন। ২০২৩ সালের প্রথম থেকেই এই আয়োজনের কার্যক্রম শুরু হয়।
ফেস্টিভ্যালের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং অংশগ্রহণের পদ্ধতিসহ নানা বিষয়ে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনলাইন, মিডিয়া এমনকি সরেজমিনে গিয়েও ফেস্টিভ্যালের আয়োজকরা প্রচারণা চালান। আয়োজকরা ইসলামিক ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুঠোফোন দিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের ৯টি দেশ থেকে ফেস্টিভ্যালের অংশগ্রহণকারীরা মোট ১০৬টি চলচ্চিত্র জমা দিয়েছেন। যার মধ্যে ৭৩টি চলচ্চিত্র প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করে ফেস্টিভ্যালের বিচারক পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তী সময়ে তারা ৩৯টি চলচ্চিত্রকে প্রদর্শনীর জন্যে নির্বাচিত করেন। ফেস্টিভ্যালের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ীরা আকর্ষণীয় পুরস্কার অর্জনের পাশাপাশি সুযোগ পাবেন মিডিয়া গবেষক এবং স্বনামধন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা এবং পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ।
উৎসবে প্রধান বিচারক হিসেবে ছিলেন আয়াজ খান, যিনি পাকিস্তানে মোবাইল জার্নালিজম, মোজোর প্রসারে অগ্রগণ্য ভূমিকা রেখেছেন। এছাড়া তিনি ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালেও বিচারক হিসেবে কাজ করছেন। এই আয়োজনে বিচারক হিসেবে আরো ছিলেন মাল্টিমিডিয়া আর্টিস্ট প্রফেসর ডা. মার্তা মিয়াস্কোওসা, প্রযুক্তি লডজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাইন অনুষদে গবেষণা এবং শিক্ষণ কর্মচারী হিসেবে নিযুক্ত আছেন। এ ছাড়াও ছিলেন লিথুয়ানিয়ার আর্টিসোকাই ফিল্ম প্রোডাকশন এর নুরুজ্জামান খান, একাধারে শিল্পী, লেখক, গবেষক, চলচ্চিত্র নির্মাতা। আরো থাকছেন ডিডাব্লিউ একাডেমি এশিয়া ও ইউরোপ ডয়চে ভেলের প্রজেক্ট ম্যানেজার এবং প্রশিক্ষক ফাহমিম ফেরদৌস। তিনি একাধারে সাংবাদিক, উপস্থাপক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।
ফেস্টিভ্যালের প্রথমদিনে বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকছেন অনিন্দ্য ব্যানার্জী, চলচ্চিত্র পরিচালক এবং হেড অব কন্টেন্ট, চরকি এবং প্রধান অতিথি হিসেবে থাকছেন ডক্টর এম লুতফর রহমান, ভাইস চ্যান্সেলর, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
এছাড়া দ্বিতীয় দিনে, বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন প্রফেসর ডক্টর লিজা শারমিন, ডিন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ এবং প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন ডক্টর মোফাখখারুল ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ।
সিডিএসটিএফের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে থাকছে নিউজ পোর্টাল প্রথমআলোডটকম। এছাড়া পুরস্কার বিতরণের অংশীদার হিসেবে থাকছে বাংলাদেশ টাইমস, ইরফান ট্রেডস এবং লুমিফিউশন। এই আয়োজনকে বিশ্বের সব প্রান্তে ছড়িয়ে দিতে বৈশ্বিক অংশীদার হিসেবে যুক্ত হয়েছে মিনা। যুব সম্প্রদায়ের অংশীদার হিসেবে থাকছে আইসিডি, ইনিশিয়েটিভ ফর কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট এবং প্রাতিষ্ঠানিক অংশীদার হিসেবে যুক্ত হয়েছে সুইনবার্ন ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি। এ ছাড়াও, সিডিএসটিএফ এর অংশীদার হিসেবে থাকছে সাইট ভল্ট, যারা নির্বাচিত চলচ্চিত্রগুলো স্ট্রিমিং করবে। সার্বিক সহযোগিতায় থাকছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
এই ফেস্টিভ্যালের স্লোগান হচ্ছে ‘রিয়েল স্টোরিজ বাই রিয়েল পিপল’।
/এম/