ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসন বন্ধে পাঁচটি সুপারিশ পেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পূর্বে রেকর্ডকৃত এবং ৮ম বিশেষ ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনে সম্প্রচারিত ভাষণে তিনি এ পরামর্শ দেন।
অবিলম্বে এই আগ্রাসন বন্ধের জন্যে বিভিন্ন দেশ ক্রমাগত আহ্বান জানিয়ে আসলেও ইসরায়েলের এই আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের এই নৃশংস ও নজিরবিহীন আগ্রাসন নিয়ে আলোচনার জন্য গত ৯ নভেম্বও থেকে রিয়াদে এই শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে। এই বিশেষ ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলন আহ্বান করেছেন সৌদি আরব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসন বন্ধে পাঁচটি সুপারিশ পেশ করেন।
তিনি প্রথমে, ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইসরাইল পরিচালিত জঘন্য একতরফা যুদ্ধ বন্ধে অবিলম্বে ‘যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানান (এটা দরকার)।
তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধ অন্যায্য এবং এটি মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের নির্মম লঙ্ঘন।
ইসরায়েল কোন বিরতি ছাড়াই নির্দয় তান্ডব চালাচ্ছে, হাসপাতাল ও বেসামরিক অবকাঠামোতে বোমাবর্ষণ করছে এবং হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।’
প্রধানমন্ত্রী তার দ্বিতীয় সুপারিশে বলেন, বিধ্বস্ত গাজায় আটকে পড়া বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী উপকরণের অবিচ্ছিন্ন, দ্রুত এবং নিরাপদ সরবরাহের জন্য অবিলম্বে একটি মানবিক করিডোর খোলার প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি বলেন, বিরামহীন ইসরায়েলি বোমা হামলায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হওয়ার এ সময়ে, মনে হচ্ছে আমরা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মৃত্যু ও ধ্বংসের দৃশ্য দেখে অচল হয়ে পড়েছি।
তিনি বলেন, ‘অন্তত একটি নিরাপদ মানবিক করিডোরের জন্য আমাদের দ্রুত কাজ করা দরকার।’
তৃতীয়ত, শেখ হাসিনা বলেন, নিরপরাধ বেসামরিক মানুষ হত্যা এবং বর্বর উপায়ে এলাকাগুলো উচ্ছেদ করায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের জঘন্য কাজের শাস্তি হওয়া উচিত যাতে গাজায় যাদের বাড়িঘর রয়েছে তারা আবারও তাদের নিজ দেশে শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারে।’
চতুর্থত, তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই জাতিসংঘ, আরব শান্তি উদ্যোগ এবং কোয়ার্টেট রোড ম্যাপে সম্মত হওয়া সিদ্ধান্তগুলো পুনরায় দেখে নেয়া এবং দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে যা এই অঞ্চলের জনগণের মধ্যে স্থায়ী শান্তি আনবে।’
পঞ্চম পরামর্শে তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, তারা আমাদের ভাই ও বোন যারা গত ৫৫ বছর ধরে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং তাদের নিজস্ব মাতৃভূমির অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন সময় এসেছে যে আমরা সবাই একসাথে তাদের পাশে দাঁড়াই এবং তাদের ন্যায্য দাবিটি উপলব্ধি করতে তাদের সহায়তা করি।’
/এমএ/