বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩
পলিনেট হাউস পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদনে সফল শফিকুল
জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব
প্রকাশ: রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৩, ১:৪৭ পিএম
উচ্চতাপ, অতিবৃষ্টি আর ভাইরাসজনিত নানাবিধ সমস্যার কারণে চারা উৎপাদনে যাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য নির্মাণ করা হয়েছে পলিনেট হাউস। গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদী পাড়াতলা গ্রামে ১০ শতক জায়গার ওপর এ পলিনেট হাউস নির্মিত হয়। শফিকুল ইসলাম নামে এক কৃষকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি প্রকল্পের অর্থায়নে পলিনেট হাউসটি  নির্মাণ করা হয়। পলিনেট হাউসের উৎপাদিত চারার সুফল পাওয়ায় দিন দিন এর চাহিদা বাড়ছে, এমনটাই বলছেন চাষিরা। 

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় সবজি উৎপাদনে প্রতিবন্ধকতা দূর করে আধুনিক পদ্ধতিতে পলিনেট হাউসের মাধ্যমে উৎপাদিত হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির সবজি। যা বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি প্রকল্পের অর্থায়নে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদী ব্লকের কৃষক শফিকুল ইসলামের দশ শতক জমির উপর নির্মিত হয়েছে পলিনেট হাউস। আধুনিক পদ্ধতিতে পলিথিন ও নেট দিয়ে তৈরি ঘরে বারমাসি সবজির চারা উৎপাদন করা হয়।

ভৈরবে উচ্চ মূল্যের ফসলগুলোর মধ্যে ফুলকপি, বাধাকপি,টমেটো, শিম, লাউ, কাচামরিচসহ আরো কিছু সবজির চারাগুলো ভৈরবে পার্শবর্তী জেলা উপজেলা থেকে সংগ্রহ করতো কৃষকরা। এসকল চারাগুলো গুনগত মান খুব একটা ভাল হতো না। জমিতে চারা রোপনের পর অধিকাংশ চারাই নষ্ট হয়ে যেত। এখানে পলিনেট হাউস হওয়ায় এখন ভৈরবের কৃষকদের বাহির এলাকা থেকে চারা সংগ্রহ করতে হয়না। 

পলিনেট হাউসে মাটির পরিবর্তে নারিকেলের ছোবরায় তৈরি কোকোপিটে চারা উৎপাদন করা হয়ে থাকে। ফলে চারাগুলোতে  ভাইরাস ও পোকামাকড়ের উপদ্রব হয়না।  এ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনের ২০ দিন পর জমিতে রোপণ করা যায়। এ পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদনে কোনো রাসায়নিক বা কীটনাশকের প্রয়োজন নেই। চারােেরাপনের পর সার বা বৃষ্টির পানির প্রয়োজন হয়না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছেন স্থানীয়ভাবে এখানে পলিনেট হাউস হওয়ায় এর সুফল পাচ্ছে স্থানীয় কৃষকসহ বাহির অঞ্চলের কৃষকরাও। এবং পলিনেট হাউসের উৎপাদিত চারা রোপন করে কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  
 
সরেজমিনে স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা হলে, তারা স্বদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আগে আমরা ভৈরবের পার্শবর্তী জেলা উপজেলা থেকে চারা কিনে আনতাম। সেই চারাগুলো মান সম্মত ছিলনা। জমিতে রোপনের পর চারাগুলো নষ্ট হয়ে যেত। এখানকার উৎপাদিত চারাগুলোতে সার কীটনাশক ও পানি দিতে হয়না। চারাগুলোও দামে কম ও সুস্থ সবল। তাই আমরা এখন আর অন্য কোথাও থেকে চারা সংগ্রহ করিনা। এখানকার উৎপাদিত চারা দিয়েই আমরা চাষাবাদ করি। আধুনিক পদ্ধতির পলিনেট হাউসের চারা এখন অন্যত্র  বিক্রি হচ্ছে।’

উদ্যোক্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে আমি বিভিন্ন জাতের সবজির চারা উৎপাদন করে নিজের জমিসহ অন্যান্য কৃষকদের কাছে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি। আমার এখানের চারাগুলোতে কোন সার কীটনাশক দিতে হয়না। চারাগুলো যেন ভাইরাসমুক্ত সুস্থ-সবল থাকে সেজন্য আমি সার্বক্ষনিক কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে থাকি। কৃষি অফিসের লোকজনও পলিনেট হাউসটি পরিদর্শন করে পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা করছে।’

উপ-সহকারি কৃষি অফিসার বায়তুল হক বলেন, ‘আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি প্রকল্পের অর্থায়নে কৃষক শফিকুল ইসলামের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার দশ শতক জমির উপর নির্মান করা হয়েছে পলিনেট হাউস। এখানে গুনগত মানসম্পন্ন ও রোগবালাই মুক্ত চারা তৈরি করতে এখানে পলিনেট হাউসটি তৈরি করা হয়েছে। কুকোপিঠে চারা তৈরির শুরু থেকেই যত্নসহ সার্বিক করণীয়গুলো দেখবাল করতে পলিনেট হাউসে লোক নিয়োগ রয়েছে।’ 

কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম বলেন, নিরাপদ ভাবে সবজি উৎপাদনের আধুনিক পদ্ধতির নাম হচ্ছে পলিনেট হাউস। কুকুপিঠের মাধ্যমে চারা উৎপাদিত হওয়ায় চারাগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়না। তাই কৃষকরা এখন পলি হাউসের উৎপাদিত চারার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ফলে দিন দিন চারা উৎপাদন ও বেচা বিক্রি বেড়েছে পলি হাউসের। কৃষক শফিকুল ইসলামের পলিনেট হাউস থেকে এখন ভৈরবের কৃষকরা পলি হাউসের জৈব সার দিয়ে উৎপাদিত সুন্দর ও সুস্থ সবল চারা কিনতে পারছেন কম দামে । এখানকার উৎপাদিত চারাগুলো শুধু ভৈরবেই নয় পার্শবর্তী জেলা উপজেলায়ও যাচ্ছে।            

/এমএ/         








 




« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






● সর্বশেষ সংবাদ  
● সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
অনুসরণ করুন
     
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : লুৎফর রহমান হিমেল
প্রকাশক: স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়া লিমিটেড-এর পক্ষে মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী কর্তৃক আবরন প্রিন্টার্স,
মতিঝিল ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ১০, তাহের টাওয়ার, গুলশান সার্কেল-২ থেকে প্রকাশিত।
ফোন: +৮৮০২-৮৮৩২৬৮৪-৬, মোবাইল: ০১৪০৪-৪৯৯৭৭২। ই-মেইল : e-mail: swadeshnewsbd24[at]gmail.com, info[at]swadeshpratidin.com
● স্বদেশ প্রতিদিন   ● বিজ্ঞাপন   ● সার্কুলেশন   ● শর্তাবলি ও নীতিমালা   ● গোপনীয়তা নীতি   ● যোগাযোগ
🔝