বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমি বারবরই বলে আসছি আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন সম্ভব না। এটা পরীক্ষিত। অতীতে আমরা পরপর দুইটি নির্বাচন করেছি। তাদের অধীনে যে কখনো কোনো সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না ও জনগনকে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে না এ ব্যাপারে সন্দেহ কারোই থাকার কথা না।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভিনদেশে গিয়ে বিদেশিদের কাছে কথা দিয়েছেন খুব সুন্দর অবাধ নির্বাচন হবে। কোনো চিন্তার কারণ নেই। তখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন টপ অবজারভেটারি টিম পাঠিয়েছিল। এই টিম দেশের সব রাজনৈতিক দলসহ সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা পরিস্কার করে বলেছেন যে, বাংলাদেশ অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নাই। এখানে অবজারভার টিম পাঠানোর পরিবেশ নেই। তাই এটা প্রমাণিত হয়ে গেল যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে টিম এসেছিল সেই টিমের কথায় সত্যি। এ জিনিসটা নতুন করে বলে, বার বার বলে তো লাভ হচ্ছে না। কারণ উনারা তো কানে তুলা দিয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ওদের (সরকারি দলের নেতাদের) বক্তব্য শুনলে দেখবেন, একটার ওপর তারা খুব জোর দিচ্ছেন। তা হচ্ছে, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রাখতেই হবে। এট দ্য কস্ট অব দ্য কান্ট্রি, এট দ্য কস্ট অব দ্য নেশন, কস্ট অব ডেমোক্রেসি। এই যে বিষয়টা এটা কি একটা জাতি যারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছে, যারা লড়াই করেছে, ত্যাগ স্বীকার করেছে তারা কিভাবে মেনে নেবে।
ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা শত প্ররোচণার মুখেও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছি। এত গ্রেপ্তার, মামলা, অত্যাচার নির্যাতনের পরেও আমরা শেষ পর্যন্ত যাব। এটা শেষ পরিণতি কি হবে তা নির্ভর করবে সরকারের ওপর। সরকারের আচরণ কি হচ্ছে তার ওপরে নির্ভর করবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শঙ্কা প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যতদিন আপনি (শেখ হাসিনা সরকার) থাকবেন এটা আরও সংঘাতের দিকে যাবে। আরও খারাপের দিকে যাবে এবং সংঘাত আরও বাড়তে থাকবে। এখনো সংঘাত শুরু হয়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগ যেভাবে এগুচ্ছে তাতে জনগণ রুখে দাঁড়াবে, এটা পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে। জনগণই তাদের অধিকার আদায় করবে। কারণ জনগণ লড়াই করে, যুদ্ধ করেই স্বাধীনতা এনেছে। ১৯৯০ সালে এরশাদের সময়ে জনগণ লড়াই করে, সংগ্রাম করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। এখনো জনগণ লড়াই করছে, সংগ্রাম করছে।’
ক্ষমতাসীন সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। দেশ ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য ও মানুষের অধিকারকে রক্ষা করার জন্য আপনারা দয়া করে এই জায়গা থেকে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের দাবি আমরা সেজন্যই জানিয়েছি। প্লিজ এই জায়গা থেকে সরে আসেন। এসে পদত্যাগ করেন। যেনো সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের একটা সরকার নির্বাচিত করতে পারে। তাদের একটা জনগণের পার্লামেন্ট গঠন করতে পারে তার ব্যবস্থা করেন।’
সংবাদ সম্মেলনে গত মঙ্গলবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো জানাতে বিএনপি মহাসচিব এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন।
মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ এর সম্পাদক আদিলুর রহমার খান ও পরিচালক এএমএম নাসির উদ্দিনের সাজা প্রদানের বিষয়ে জুডিশিয়াল ক্যাডার সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি প্রদানের নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেছে, এমন বিবৃতি প্রদান নজিরবিহীন ঘটনা। এটা নিঃসন্দেহে নিরপেক্ষ আচরণের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা মনে করে, বিচার ব্যবস্থার সকল পর্যায়ের বিচারকদের বিতর্কিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হতে বিরত থাকা বাঞ্ছনীয়।
প্রকাশক: স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়া লিমিটেড-এর পক্ষে মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী কর্তৃক আবরন প্রিন্টার্স, মতিঝিল ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ১০, তাহের টাওয়ার, গুলশান সার্কেল-২ থেকে প্রকাশিত।
ফোন: +৮৮০২-৮৮৩২৬৮৪-৬, মোবাইল: ০১৪০৪-৪৯৯৭৭২। ই-মেইল : e-mail: swadeshnewsbd24[at]gmail.com, info[at]swadeshpratidin.com