মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০ আশ্বিন ১৪৩০

মরক্কোতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬৩২
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রকাশ: শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৪:৩৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

মরক্কোতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬৩২

মরক্কোতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬৩২

মরক্কোয় শুক্রবার রাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৬৩২ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছেন আরও ৩২৯ জন। শনিবার সকালে মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ভূমিকম্পে আটলাস পর্বতমালার গ্রামগুলো থেকে ঐতিহাসিক শহর মারাকেশ পর্যন্ত ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অনুসন্ধান অব্যাহত থাকায় এবং উদ্ধারকারীরা দুর্গম এলাকায় পৌঁছালে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মরক্কোর মিডিয়া জানিয়েছে, মারাকেশ শহরের সবচেয়ে বিখ্যাত ঐতিহাসিক ভবনগুলোর মধ্যে একটি দ্বাদশ শতকের কৌতুবিয়া মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এর পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। এর ৬৯-মিটার (২২৬-ফুট) মিনারটি ‘মারাকেশের ছাদ’ নামে পরিচিত।

এছাড়াও মরক্কোর ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট মারাকেশে পুরনো শহরকে ঘিরে থাকা বিখ্যাত লাল দেয়ালের কিছু অংশের ক্ষতি হয়েছে।

ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি একটি শহরের মেয়র মরক্কোর নিউজ সাইট টুএম-কে বলেছেন, কাছাকাছি শহরের বেশ কয়েকটি বাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে এবং কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ ও রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

তালাত এন'ইয়াকুব শহরের মেয়র আবদেররহিম আইত দাউদ বলেছেন, কর্তৃপক্ষ আল হাউজ প্রদেশে রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য কাজ করছে, যাতে অ্যাম্বুলেন্স ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য সহায়তা বহনকারী গাড়িগুলো যাতায়াত করতে পারে।

তিনি বলেন, পাহাড়ি গ্রামের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে সময় লাগবে।

স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রের আশেপাশের পাহাড়ি অঞ্চলে যাওয়ার রাস্তাগুলোয় যানবাহন আটকে আছে। ধসে পড়া পাথরের কারণে এগুলো অবরুদ্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে উদ্ধার প্রচেষ্টা ধীরগতিতে চলছে।

শনিবার সারাবিশ্বের মানুষ এ দুর্ঘটনায় হতাহতদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছে।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ এক্স-এ (টুইটারে) শোক প্রকাশ করেছেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, ‘ভারত এই কঠিন সময়ে মরক্কোকে সমস্ত সম্ভাব্য সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’

জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘জাতিসংঘ ক্ষতিগ্রস্ত জনসংখ্যাকে সহায়তা করার প্রচেষ্টায় মরক্কো সরকারকে সহায়তা করতে প্রস্তুত।’

ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, রাত ১১টা ১১ মিনিটে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৮। ঝাঁকুনি সহ যা কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়েছিল।

মার্কিন সংস্থা জানিয়েছে, ১৯ মিনিট পরে একটি ৪.৯ মাত্রার আফটারশক আঘাত হানে।

শুক্রবারের কম্পনের কেন্দ্রস্থল ছিল আল হাউজ প্রদেশের ইঘিল শহরের কাছে, মারাকেশ থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার (৪৩ দশমিক ৫ মাইল) দক্ষিণে।

ইউএসজিএস বলেছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রটি পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিলোমিটার (১১ মাইল) নীচে ছিল।

মরক্কোর সিসমিক এজেন্সি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্র ১১ কিলোমিটার (৭ মাইল) নীচে ছিল। এই ধরনের অগভীর ভূমিকম্প বেশি বিপজ্জনক। উত্তর আফ্রিকায় ভূমিকম্প তুলনামূলকভাবে বিরল।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব জিওফিজিক্সের সিসমিক মনিটরিং অ্যান্ড ওয়ার্নিং বিভাগের প্রধান লাহসেন মাহনি টুএম টিভিকে বলেছেন, এবারের ভূমিকম্পটি পাহাড়ি অঞ্চলে রেকর্ড করা সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল।

১৯৬০ সালে মরক্কোর আগাদির শহরের কাছে ৫.৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে এবং হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়।

আগাদির ভূমিকম্প মরোক্কোতে নির্মাণ নিয়মে পরিবর্তন আনে। কিন্তু অনেক ভবন, বিশেষ করে গ্রামীণ বাড়ি, এই ধরনের ভূমিকম্প সহ্য করার মতো করে নির্মিত হয় না।

২০০৪ সালে ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলীয় শহর আল হোসেইমার কাছে একটি ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে ৬০০ জনেরও বেশি লোক মারা গিয়েছিল।

শুক্রবারের ভূমিকম্পটি পর্তুগাল ও আলজেরিয়ার মতো দূরবর্তী স্থানেও অনুভূত হয়েছিল।

পর্তুগিজ ইনস্টিটিউট ফর সি অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ার এবং আলজেরিয়ার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সিতেও এর জরুরি প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী
প্রকাশক: স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়া লিমিটেড-এর পক্ষে মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী কর্তৃক আবরন প্রিন্টার্স,
মতিঝিল ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ১০, তাহের টাওয়ার, গুলশান সার্কেল-২ থেকে প্রকাশিত।
ফোন: +৮৮০২-৮৮৩২৬৮৪-৬, মোবাইল: ০১৪০৪-৪৯৯৭৭২। ই-মেইল : e-mail: swadeshnewsbd24@gmail.com, info@swadeshpratidin.com
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী
প্রকাশক: স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়া লিমিটেড-এর পক্ষে মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী কর্তৃক আবরন প্রিন্টার্স,
মতিঝিল ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ১০, তাহের টাওয়ার, গুলশান সার্কেল-২ থেকে প্রকাশিত।