মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০ আশ্বিন ১৪৩০

তওবার পর নিজেকে পরিশুদ্ধ করবেন যেভাবে
ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশ: বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০২৩, ১১:৩৪ এএম | অনলাইন সংস্করণ

তওবা মানুষের জীবনকে পবিত্র করে। মনেপ্রাণে তওবাকারী সব পাপ ধুয়েমুছে নিষ্পাপ শিশুর মতো নিষ্কলুষ হয়ে যায়। কোরআন ও হাদিসে মুসলিম জাতিকে বারবার তওবা ও ইস্তেগফারের কথা বলা হয়েছে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং তাদেরও ভালোবাসেন যারা পবিত্র থাকে।’ -(সুরা বাকারা, আয়াত, ২২২)

অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘যে তাওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গুনাহসমূহ নেকি দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন।’ -(সুরা, ফুরকান, আয়াত, ৭০)

আরও বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর কাছে তওবা (প্রত্যাবর্তন) কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। -(সূরা নূর, ৩১)

অনেক সময় তওবা করার পর মানুষ শয়তানের ধোঁকায় পড়ে আবারও পাপ করে ফেলে এতে করে সে হতাশায় পড়ে যায়। অথচ এতে হতাশার কিছু নেই। কারণ, আল্লাহর রহমত অনেক বিস্তৃত। তিনি অত্যন্ত দয়ালু, বান্দাকে ক্ষমা করতে ও তার প্রতি দয়া দেখাতে পছন্দ করেন।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাদিসে বলেছেন– ‘সেই মহান সত্তার কসম যার হাতে আমার জীবন! যদি তোমরা পাপ না কর, আল্লাহ তোমাদের নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে (তোমাদের পরিবর্তে) এমন এক জাতি আনয়ন করবেন, যারা পাপ করবে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করবে। আর আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। -(মুসলিম, ২৭৪৮)

তবে আল্লাহর রহমতের কথা ভেবে তওবার পর বারবার নিজ ইচ্ছায় গুনাহ করা উচিত নয়। হতে পারে কখনো গুনাহ করে ফেরার পর আবার নতুন করে তওবা করার আগেই মৃত্যুদূত চলে আসবেন। তখন পাপ নিয়েই কবরে যেতে হবে। তাই তওবার পর থেকে পূতঃপবিত্র জীবনযাপনের জন্য নিজের ভেতর পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। পরিবর্তন আনতে বেশ কিছু পন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে-

১. প্রথমেই আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন- তিনি তওবার তাওফিক দিয়েছেন। হারাম কাজে লিপ্ত অবস্থায় আল্লাহ আপনার রূহ কবজ করেননি এজন্য।

২. খারাপ বন্ধুদের থেকে দূরে থাকুন। তাদের সঙ্গে উঠা-বসা করবেন না। মোবাইল থেকে তাদের নম্বর মুছে ফেলুন। তাদের কথা মনে করিয়ে দেয় এমন সব কিছু সরিয়ে ফেলুন। কারণ, তারাই পাপাচারে প্ররোচিত করে। আচার-আচরণে তাদের সঙ্গে ঢিলেমি করলে কখনো না কখনো আপনাকে তাদের পথে নিয়ে যাবে।

৩. অতীতের সব গুনাহের স্মৃতি থেকে মুক্ত হয়ে যান। যেমন ছবি, হারাম এ্যাপস, মোবাইলে থাকা হারাম ভিডিও ক্লিপ মুছে ফেলুন। এগুলো তওবার প্রতি আপনার ঐকান্তিকতার প্রমাণ বহন করে।

৪. প্রথম দিকে গুনাহ পরিহার কঠিন লাগবে। কিন্তু নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করুন, ধৈর্য ধরুন। আল্লাহ তায়ালার এ বাণী স্মরণ করুন-

وَ مَنْ يَّتَّقِ اللهَ  يَجْعَلْ لَّهٗ  مَخْرَجًا

যে কেউ আল্লাহকে ভয় করবে, আল্লাহ তার জন্য সংকট থেকে উত্তরণের কোনো পথ তৈরি করে দেবেন। -(সূরা তালাক (৬৫), আয়াত, ২)

৫. নিজের ভেতর আল্লাহর ভয় ও শাস্তির দিকটি প্রবল করে তুলবেন না। মনে রাখবেন, আল্লাহ তায়ালা ব্যাপক ক্ষমার অধিকারী। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-

اِنَّ  رَبَّکَ وَاسِعُ  الْمَغْفِرَةِ

নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক প্রশস্ত ক্ষমাশীল। -(সূরা নাজম (৫৩), আয়াত, ৩২)

وَ اِنِّيْ لَغَفَّارٌ لِّمَنْ تَابَ

যে তওবা করে আমি তার জন্য পরম ক্ষমাশীল। -(সূরা তাহা (২০), আয়াত, ৮২)

৬. তওবার পর নতুন জীবনের শুরুটা করুন সুদৃঢ়ভাবে, নেক কাজ সাহসের সঙ্গে শুরু করুন এবং অব্যাহত রাখার চেষ্টা করুন।

৭. পাপ থেকে বেঁচে তওবার ওপর অটল থাকতে আল্লাহর কাছে দৃঢ়তা লাভের জন্য দোয়া করুন। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ দোয়ার প্রতি গভীর মনোযোগ দিন-

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِينِكَ

হে অন্তরের পরিবর্তনকারী, আমার অন্তর আপনার দ্বীনের ওপর সুদৃঢ় করুন। -(জামে তিরমিজি, হাদিস, ৩৫২২)

৮. ব্যক্তিগত ইবাদতে যত্নশীল হোন। যেমন, নফল রোজা, কিয়ামুল লাইল (রাতে তাহাজ্জুদ, নফল নামাজ, তিলাওয়াজ, জিকির) মাঝে মাঝে ওমরা করা। দ্বীনের ওপর অবিচল থাকতে এসব ইবাদতের বড় প্রভাব রয়েছে।

৯. সুন্নত আদায়ে যত্নশীল হোন। এ অভ্যাস আপনার ঈমান ও দৃঢ়তা বৃদ্ধি করবে। এটা আপনার প্রতি আল্লাহর মহব্বতের কারণ। ঈমানের স্বাদ লাভের মাধ্যম।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী
প্রকাশক: স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়া লিমিটেড-এর পক্ষে মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী কর্তৃক আবরন প্রিন্টার্স,
মতিঝিল ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ১০, তাহের টাওয়ার, গুলশান সার্কেল-২ থেকে প্রকাশিত।
ফোন: +৮৮০২-৮৮৩২৬৮৪-৬, মোবাইল: ০১৪০৪-৪৯৯৭৭২। ই-মেইল : e-mail: swadeshnewsbd24@gmail.com, info@swadeshpratidin.com
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী
প্রকাশক: স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়া লিমিটেড-এর পক্ষে মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী কর্তৃক আবরন প্রিন্টার্স,
মতিঝিল ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ১০, তাহের টাওয়ার, গুলশান সার্কেল-২ থেকে প্রকাশিত।