মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০ আশ্বিন ১৪৩০

পেঁয়াজ, আদা ও জিরার বাজারে আগুন, ক্রেতাদের নাভিশ্বাস
এইচ এম. ইমরান হোসাইন
প্রকাশ: বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩, ২:৩৯ পিএম আপডেট: ০৮.০৬.২০২৩ ৩:২৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

>> প্রতি কেজি আদা কিনতে সরকারকে ভ্যাট দিতে হচ্ছে ১০৭ টাকা
>> কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে আরও বাড়তে পারে দাম
>> সিন্ডিকেটের কারণেই এত দাম বৃদ্ধি
>> নিয়মিত বাজার মনিটরিং দরকার দাবি ব্যবসায়ীদের

রাজধানীর কাঁচাবাজারে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, জিরা ও বিভিন্ন মশলার দাম। কোন ক্রমেই কমানো যাচ্ছে না এসকল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মশলাজাতীয় পণ্যের দাম বেড়েছে প্রায় দিগুনেরও বেশি। এমন লাগামহীন দাম বৃদ্ধির ফলে বাড়ছে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস। গত দু সপ্তাহ আগেও যে দ্রব্যের দাম ছিল কেজি প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে, সেসব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা এমনকি কিছু দ্রব্যের দাম ৭০০ টাকাও ছাড়িয়েছে। গত ১০ দিন আগেও প্রতি কেজি আদার দাম ছিল ২৫০ টাকা থেকে ২৭৫ টাকা। সেটার দাম এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দিগুন।

রাজধানীর কাওরান বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি বারমা আদার দাম ৩০০ থেকে সাড়ে তিনশো টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। যেটা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। ব্যবসায়ীরা বলছে, প্রতি কেজি আদা ইনপুট করে আনতে সরকারকে ভ্যাট দিতে হচ্ছে ১০৭ টাকা করে। যার কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া চায়নিজ আদার দাম আরও বেশি। বাজার থেকে এ আদা উধাও হয়ে গেছে। 

এদিকে মশলার দাম বেড়েছে প্রায় দিগুন। কয়েকদিন আগেও জিরা ছিল কেজি প্রতি ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা । সেটা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি। কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে জিরার দাম বেড়েছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। 

এছাড়া এলাচের দামও বেড়েছে কেজিতে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। দেশি শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে প্রায় ২০০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছে, এসকল দ্রব্য আমাদের চড়া দামে কিনতে হচ্ছে, যার কারণে বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে।

এদিকে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে পেঁযাজের দাম। শুক্রবার (১৯ মে) বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছিলেন, দাম না কমলে দু-একদিনের মধ্যে পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। তাঁর এমন আশ্বাসেও কমেনি পেঁয়াজের দাম, বরং বেড়েই চলেছে। এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজ কিনতে গুনতে হচ্ছে ৮০ টাকা করে। পাশাপাশি আলু, কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা। প্রতি কেজি আলুর দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা করে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে এসব পণ্যের দাম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

ক্রেতারা বলছে, পেঁয়াজ, আদা, মশলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারে আগুন। এসব দ্রব্য কিনতে ব্যয় করতে হচ্ছে দিগুন টাকা, যেখানে আমাদের বেতন বাড়ছে না। এজন্য পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে। তিনবেলার খাবার খেতে হচ্ছে দু'বেলা। 

ক্রেতারা আরও বলছে, প্রতিনিয়ত বাজারে এসে দেখি সকাল থেকে বিকেলের ব্যবধানেই কাঁচা মরিচ, বেগুন, পেঁপেসহ বিভিন্ন দ্রব্যের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা করে বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকা হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতিনিয়ত যদি বাজার মনিটরিং করা যায় তাহলে দ্রব্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে বলেও মনে করেন তারা।

এমন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে স্বল্প আয়ের মানুষ। হিমশিম খাচ্ছে পরিবার চালাতে। 

কাওরান বাজারে বাজার করতে আসা এক ক্রেতা স্বদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির ফলে তিনবেলা খেয়ে বেঁচে থাকায় কঠিন হয়ে পড়েছে। যেখানে প্রতিদিন তিনবেলা পেট পুরে খেতাম, সেখানে এখন খেতে হচ্ছে দু'বেলা। উপায় নেই, কারণ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়লেও আমাদের স্যালারি বাড়েনি।

দ্রব্যের এমন দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে কাওরান বাজারের এক ব্যবসায়ী স্বদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বাংলাদেশে ডলারের সংকট এবং মূল কারণ বড়বড় ব্যবসায়ীরা মালামাল মজুদ করে রেখে পুরো সিন্ডিকেট করে দ্রব্যের দাম দিগুন বাড়িয়ে দেয়। সুষ্ঠু মনিটরিং করে শ্যামবাজারে যদি অভিযান চালানো হয় তাহলে দ্রব্যমূল্যের দাম কমে আসবে বলেও জানান তিনি।

কাওরান বাজারের খুচরা ব্যাবসায়ীরা বলছেন, সিন্ডিকেটের কারণে এসব দ্রব্যের দাম এত বেড়েছে। আমাদের প্রতিটি পণ্য চড়া দামে কিনে আনতে হচ্ছে। এজন্য আমাদের বেশি দাম দিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।  দ্রব্যমূল্যের দাম কমাতে হলে সিন্ডিকেটের লাগাম ধরতে হবে। নিয়মিত অভিযাস চালাতে হবে। তাহলেও দ্রব্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী
প্রকাশক: স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়া লিমিটেড-এর পক্ষে মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী কর্তৃক আবরন প্রিন্টার্স,
মতিঝিল ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ১০, তাহের টাওয়ার, গুলশান সার্কেল-২ থেকে প্রকাশিত।
ফোন: +৮৮০২-৮৮৩২৬৮৪-৬, মোবাইল: ০১৪০৪-৪৯৯৭৭২। ই-মেইল : e-mail: swadeshnewsbd24@gmail.com, info@swadeshpratidin.com
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী
প্রকাশক: স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়া লিমিটেড-এর পক্ষে মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী কর্তৃক আবরন প্রিন্টার্স,
মতিঝিল ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ১০, তাহের টাওয়ার, গুলশান সার্কেল-২ থেকে প্রকাশিত।