সূর্যমুখী চাষে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন আলতাফের
গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
|
![]() সূর্যমুখী চাষে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন আলতাফের জানা যায়, কলেজের অধ্যক্ষ থেকে অবসরে গিয়ে এখন একজন সফল কৃষক আলতাফ। তিনি কলেজের অধ্যক্ষ থেকে বিগত ২০১০ সালে অবসরে যান। অধ্যক্ষ থাকা অবস্থায় ১৯৮৫ সালে প্রথম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন সফল এই কৃষক। এদিকে যমুনা নদীর ভাঙনে তার সিংহভাগ জমিই চরে পরিণত হয়েছে। তার চরের জমিতে উন্নত ফসলের চাষ করে সফল হওয়ার জন্য তিনি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার প্রাক্কালেই বেছে নেন কৃষি পেশা। তার চরে গম, ভুট্টা, কাউন, চিনা, পিঁয়াজ, রসুন, মরিচ, তিল, তিশি, কুসুম ফুল, কালোজিরা, ধনিয়া সহ নানা রবি ফসলের চাষ করে প্রতিবছর অনেক টাকা আয় করে কৃষক হিসেবে সফলতা অর্জন করেছেন। এরই মাঝে একদিন পত্রিকায় সূর্যমূখীর তেলের পুষ্টিগুণ ও ফলন দেখে গত বছর কৃষি গবেষণার এক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে তাদের উদ্ভাবিত বীজ নিয়ে ৩বিঘা জমিতে চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। এই বীজের তেল ব্যবহার করে শারীরিক উপকারও পেয়েছেন এই কৃষক। তাছাড়া সূর্যমুখীর বীজ ও তেলের দাম অন্য তেলের চেয়ে অনেক বেশী। তাই কৃষি গবেষণার উদ্ভাবিত এই বীজ ও পরামর্শ নিয়ে এবার ৫ থেকে ৬ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার টাকা, জমির সূর্যমুখী এবার আরও ভালো হয়েছে উৎপাদিত সূর্যমুখী বীজ বিক্রি করে খচ বাদ দিয়ে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক আলতাফ হোসেন সরকার। সূর্যমুখী বীজ উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠান কৃষি গবেষণা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে আলতাফ হেসেনসহ চরে ২০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে। সূর্যমুখী চাষের ক্ষেত্রে প্রায় প্রতি বিঘা জমিতে ১ কেজি বীজ দিতে হয়। দেড় ফুট দূরত্বে একটি করে বীজ বপণ করতে হয়। সারি থেকে সারির দূরত্ব রাখতে হয় দেড় ফুট। মাত্র ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে বীজ বপণ থেকে শুরু করে বীজ উৎপাদন করা সম্ভব। প্রতি বিঘা জমিতে সব খরচ বাদ দিয়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় হয়। গাইবান্ধা কৃষি গবেষণা ইনিস্টিটিউট-এর প্রধান বৈজ্ঞানি কর্মকর্তা ড. আব্দুল্যাহ আল মাহমুদ জানান, নতুন উদ্ভাবিত এই সূর্যমুখী উচ্চ ফলনশীল ও বেশি লাভজনক ফসল। অল্প সময়ে কম পরিশ্রমে ফসল উৎপাদন ও ভালো দাম পাওয়া যায়। এর চাষ করা সহজ গাছ ছোট আকারের হয় অল্প বাতাসে পড়ে যায় না। সূর্যমুখীর তেলেসয়াবিন তেলের চেয়ে পুষ্টিগুণ অনেক বেশি, স্বাস্থ্যসম্মত এবং মানবদেহের রোগপ্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। চলতি মৌসুমে আলতাফ হেসেনসহ চরে ২০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ফলন দেখে আগামীতে সূর্যমুখী চাষের প্রতি কৃষকের আগ্রহ আরও বাড়বে বলে জানান তিনি। স্বদেশপ্রতিদিন/এমএস |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |