গাজীপুরে মহাসড়কে তল্লাশি, গণপরিবহনও কম
গাজীপুর প্রতিনিধি:
|
![]() গাজীপুরে মহাসড়কে তল্লাশি, গণপরিবহনও কম চেক পোস্টে থাকা পুলিশ সদস্যরা বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই সন্দেহভাজন মোটরসাইকেল, পিকআপ, দূরপাল্লার বাস, ট্রাক গতিরোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি শুরু করে। তবে গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর থেকেই মহাসড়কগুলোতে যানবাহনের পরিমাণ কমে যায়, বিশেষ করে দুরপাল্লার গাড়ি চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ পুলিশ দূরপাল্লার বাস গতিরোধ করে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ, ব্যাগ, বস্তা, মুঠোফোন তল্লাশি করছে। এতে যাত্রী ও চালকেরা অনেকেই অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে, গাজীপুর টঙ্গীতেও পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এসআই পরিবহনের সহকারী আব্দুল হালিম জনি বলেন, ঢাকায় যাওয়ার পথে টাঙ্গাইল, মির্জাপুর ও কালিয়াকৈর চন্দ্রায় পুলিশের চেকপোস্ট চোখে পড়েছে। তারা আমাদের যাত্রীদেরও জিজ্ঞাবাদ করছে। ঢাকায় ১০ তারিখের বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করেই এ তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে ধারণা তার। কালিয়াকৈর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিম হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড যেন না ঘটে, সে জন্য বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। চেকপোস্টের মাধ্যমে কাউকে সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তবে কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম জানান, গত ১ ডিসেম্বর থেকেই আমাদের বিশেষ অভিযান চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় মহাসড়কে গাড়িতে তল্লাশি চলছে। প্রতি থানার আওতায় দুইটি করে চেক পোস্টে এ অভিযান চলছে। টঙ্গী ব্রিজের উত্তরপাশে তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে পুলিশ। বুধবার থেকেই ঢাকামুখী সন্দেহভাজন যানবাহন তল্লাশি অভিযান জোরদার করা হয়েছে। ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার বাসিন্দা আব্দুল মতিন দুলাল জানান, তিনি কখনো রাজনীতি করেন না। জরুরী প্রয়োজনের ঢাকা যাচ্ছিলেন। তল্লাশির শিকার অনেকেরই বক্তব্য- তারা কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। জরুরি কাজে যে যার মতো ঢাকায় যাচ্ছিলেন। কিন্তু পথে পুলিশ তাদের গাড়ি থামিয়ে দেহ তল্লাশিসহ মুঠোফোনের ব্যক্তিগত তথ্য, গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ, ছবি ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখছে। তবে তল্লাশির তালিকায় বেশি রয়েছে মোটরসাইকেলও। ঢাকা-বিভাগের বিভিন্ন জেলাসহ ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলার মানুষের চলাচলের সহজ পথ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। ফলে ঢাকায় প্রবেশ করতে হলে শ্রীপুর হয়ে টঙ্গীর তল্লাশি চৌকিটি পার না হওয়ার সুযোগ নেই। শিপন নামের এক ব্যবসায়ী জানান, গাজীপুর থেকে দুপুরে ব্যক্তিগত কাজে ঢাকা যাচ্ছিলাম। টঙ্গী ব্রিজের উত্তরপাশে পৌঁছানোর পর পুলিশ বাস থামিয়ে তল্লাশি করে। এসময় তার স্মার্ট ফোন নিয়ে পুলিশ ফেসবুক, ইমু, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটস অ্যাপ ঘাঁটাঘাঁটি করে। টঙ্গী পূর্ব থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মিলন সাংবাদিকদের বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা দায়িত্ব পালন করছি। এখানে কাউকে কোনো ধরনের হয়রানি করা হয়নি। কেউ যেন নাশকতা তৈরি করতে না পারে বা আইনশৃঙ্খলার অবনতি না ঘটাতে না পারে সেজন্য তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তবে কাউকেই অনাহুত হয়রানী করা হচ্ছেনা। গাজীপুর মহানগর (ট্রাফিক বিভাগের) পুলিশের উপ-কমিশনার মো. আলমগীর হোসেন, বিভিন্নস্থানে পুলিশের চেক পোস্ট স্থাপন করলেও কাউকে হয়রানী করা হচ্ছে না। গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহণ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান আহমেদ সরকার জানান, ঢাকায় বিএনপি’র সমাবেশকে সামনে রেখে গাড়িতে এখন সাধারণ মানুষ (যাত্রী) কমে গেছে। তাদের মধ্যে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশ যাত্রী ছাড়াও চালক/গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। তবে কোথাও কাউকে হয়রানী করার তথ্য পাওয়া যায়নি। স্বদেশপ্রতিদিন/এমএস |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |