বৃহস্পতিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৬ আশ্বিন ১৪৩০

পাখির রাজ্য খানসামার চেয়ারম্যান বাড়ি
মোঃ শাহিন হোসেন, দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০২২, ২:৫৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

পাখির রাজ্য খানসামার চেয়ারম্যান বাড়ি

পাখির রাজ্য খানসামার চেয়ারম্যান বাড়ি

চলছে শরৎকাল। শীত, বসন্ত , গ্রীষ্ম  ও বর্ষা শেষে শরৎ ঋতুতে যেন ডানা মেলেছে মন-প্রাণ খুলে সাদা বক আর পানকৌড়ি। সবুজ পাতার ওপর পাখা গুটিয়ে বসে আছে সাদা-কালো নানা রকম বাহারি পাখি। দূর থেকে দেখে মনে হবে, যেন সাদা ফুল ফুটেছে। প্রায় প্রতিটি গাছেই রয়েছে এমন পাখির ঝাঁক। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি দেখে মনে হয় যেন এক পাখিরাজ্য।

প্রকৃতি ও পাখিদের এমন চোখ ধাঁধানো দৃশ্য ও পাখিদের অবিরাম কিচিরমিচির শব্দ কানে আসবে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ৫নং ভাবকী ইউনিয়নের কুমুরিয়া গ্রামের চেয়ারম্যান বাড়িতে। পাখিপ্রেমী মহুরম ছফি উদ্দিন মন্ডল ও হযরত আলী এবং ভাবকী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহুরম নজরুল হক শাহ্ বহু যুগ ধরে পাখিদের নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তুলেছেন।

দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সারা বছর পাখিদের আসা-যাওয়া এই চেয়ারম্যান বাড়িতে। কোনো উৎপাত নেই, কেউ বিরক্ত করে না। তাই দূরদেশ থেকে আসে পরিযায়ী পাখিও।

সারাদেশে যখন পাখি শিকারের মহোৎসব চলে, ঠিক তখন চেয়ারম্যান বাড়ির চিত্রটা ঠিক তার উল্টো। তাই নিরাপদ আশ্রয়ে প্রতিনিয়ত ছুটে আসে হাজার হাজার পাখি। ছয় মাস থেকে যায় এই নিরাপদ আশ্রয়ে। দীর্ঘ যুগ ধরেই এখনো অসংখ্য গাছ ও বাঁশঝারে আশ্রয় নেয়া অথিতি ও দেশি পাখি। পাখির কলকাকলিতে মুখর চেয়ারম্যানের বাড়ির এলাকা।

চেয়ারম্যান বাড়ির চারপাশে প্রায় ৫৫বিঘা জমির উপর সবুজ ছায়া ঘেরা হাজারো গাছ ও হাজারো বাঁশঝারে দীর্ঘ যুগ ধরে অতিথি পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে।

প্রতি বছর শীতকাল জুড়ে অতিথি পাখির দল ঝাঁক বেঁধে হাজির হতে থাকে এই চেয়ারম্যান বাড়ির গাছ ও বাঁশঝাড়ে। অসংখ্য গাছে রঙ-বেরঙের শত শত বক, পানিকৌরিসহ অন্যান্য পাখির ছুটোছুটি মন কেড়ে নেবে যে কারো। পাখিদের কিচির-মিচির অনেকের জন্য হলেও ভুলিয়ে দেবে ইট পাথরের জীবনের কথা।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারো এখানে সকাল বিকাল হাজার হাজার পাখির দেখা মিলছে। এসব পাখি আশপাশের বিল ও তেবাড়ী থেকে খাবার সংগ্রহ শেষে আশ্রয় নেয় চেয়ারম্যান বাড়ির গাছ ও বাঁশঝারগুলোতে।

পাখিপ্রেমী জিকরুল হক শাহ্ জানান, আমার বাপ-দাদার আমল থেকে দীর্ঘ যুগ ধরে আমাদের এ বাড়িটি চারপাশ ঘিরে পাথিদের অভয়ারণ্য। প্রতি বছরই অতিথি পাখিমুখরিত থাকে বাড়ির চারপাশ। এখানে দিনে রাতে সব সময়ই পাখিরা অবস্থান করে। প্রতি  বছরে শীতকালে পাখিদের বিচরণ দেখা গেলেও এবার বসন্তের শুরুতে পাখিদের বিচরণ অনেক বেশি ছিলো এবং এখন পযন্ত অসংখ্য পাখি আছে। পাখির এই অভায়ারণ্য দেখতে ছুটে আসে পাখিপ্রেমীরা।

পাখি দেখতে আসা আকতারুল বলেন, সাধারণত লোকালয়ে পাখিদের এমন অভয়ারণ্য সাধারণত দেখা যায়না, এমনকি এটা বিরল। এই এলাকা সত্যিই অন্যরকম। কতটুকু পাখিপ্রেম থাকলে এটা করা  সম্ভব তা বুঝতে পারছি না। আমিও ভালবাসার টানেই এখানে পাখি দেখতে এসেছি। অসাধারণ লাগছে পাখিদের এমন বিচরণ দেখে।

অতিথি ও দেশি পাখিদের রায় উপজেলার এই অভায়ারণ্যকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা দিয়ে গড়ে তোলার দাবি স্থানীয়দের। সেই সঙ্গে পাখি শিকার বন্ধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারিরও দাবি পাখিপ্রেমীদের।

খানসামা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এটিএম সুজাউদ্দিন শাহ্ লুহিন বলেন, প্রতি বছর জানুয়ারী শেষে এখানে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির আগমণ ঘটে এবং জুলাই এর শেষের দিকে চলে যায়। তবে এবার এখন পযন্ত অসংখ্য পাখি আছে। তিনি আরো বলেন, বাপ- দাদার আমল থেকে দেখে আসছি আমাদের বাড়ির চারপাশে আমাদের নিজস্ব গাছ ও বাঁশ ঝারে এসব অতিথি পাখিরা অভয়ারণ্য হিসেবে আশ্রয় নেয়।

আমাদের বাড়ির চারপাশে আমাদের নিজস্ব গাছ ও বাঁশঝারে অতিথি ও দেশি পাখিদের অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হয়েছে। এই এলাকায় ভুলেও কেউ পাখি শিকারের কথা চিন্তা করে না। কিন্তু বিল বা জমিতে  যখন পাখিরা খাবার আহরণে যায়, তখন দুষ্ট প্রকৃতির কিছু মানুষ পাখি শিকার করে। এটা বন্ধ করা গেলে পাখিদের আগমণ আরো বাড়বে।

স্বদেশপ্রতিদিন/ইমরান

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী
প্রকাশক: স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়া লিমিটেড-এর পক্ষে মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী কর্তৃক আবরন প্রিন্টার্স,
মতিঝিল ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ১০, তাহের টাওয়ার, গুলশান সার্কেল-২ থেকে প্রকাশিত।
ফোন: +৮৮০২-৮৮৩২৬৮৪-৬, মোবাইল: ০১৪০৪-৪৯৯৭৭২। ই-মেইল : e-mail: swadeshnewsbd24@gmail.com, info@swadeshpratidin.com
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী
প্রকাশক: স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়া লিমিটেড-এর পক্ষে মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী কর্তৃক আবরন প্রিন্টার্স,
মতিঝিল ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও ১০, তাহের টাওয়ার, গুলশান সার্কেল-২ থেকে প্রকাশিত।