মুজিববর্ষের উপহার ঘর পাচ্ছে আরও এক লাখ পরিবার
ডেস্ক রিপোর্ট
|
![]() সংগৃহীত ছবি নতুন ঘর মানেই নতুন আনন্দ। এ আনন্দে মাতবে দেশের আরও এক লাখ পরিবার। ‘কেউ গৃহহীন থাকবে না’- প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা অনুযায়ী দেওয়া হবে নতুন ঘর। জানা গেছে, সারাদেশে ভূমি ও গৃহহীন আট লাখ ৮২ হাজার ৩৩ পরিবারকে ঘর-জমি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে সরকার। এর মধ্যে প্রথম দফায় গত ২৩ জানুয়ারি ৬৬ হাজার ১৮৯ ঘরের মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় গৃহহীনদের এসব ঘর দেওয়া হয়। নতুন করে মুজিববর্ষেই এ কর্মসূচির আওতায় আরও এক লাখ পরিবার পাবে রঙিন ঘর। এর মধ্যে রয়েছে দুর্যোগ সহনীয় ঘরও। কারও এক বা দুই শতাংশ জায়গা রয়েছে, কিন্তু ঘর নেই বা ঘর আছে কিন্তু তা খুব ঝুঁকিপূর্ণ, তাদের এ ঘর দেওয়া হবে। এছাড়া যে পরিবারে পুরুষ সদস্য নেই বা পুরুষ সদস্য আছে, কিন্তু তার বয়স ৬৫ বছরের বেশি, নদী ভাঙনে যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন তারাও এ ঘর পাবেন। এছাড়া বেদে ও তৃতীয় লিঙ্গের লোকদের এ ঘর দেওয়া হবে। নির্দেশনা অনুসরণ করে জেলা প্রশাসকরা সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগীদের নির্বাচন করবেন। প্রায় ৫০০ বর্গফুটের প্রতিটি ঘরে রয়েছে দুটি রুম, একটি করিডোর, একটি বাথরুম ও একটি রান্না ঘর। প্রতিটি ঘরেই রয়েছে সোলার সিস্টেম ও বজ্রপাত নিরোধ ব্যবস্থা। আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর প্রকল্প পরিচালক মাহবুব হোসেন বলেন, ‘মুজিববর্ষে আমরা আরও এক লাখ ঘর দেব। আগামী এপ্রিলের মধ্যেই ৫০ হাজার ঘর দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও তা একটু পিছিয়ে গেছে। কারণ কিছু নিচু জায়গা আছে, সেগুলোতে মাটি ভরাট করা লাগবে। এজন্য একটু বেশি সময় লাগবে। বাকি ৫০ হাজার ঘর ডিসিদের (জেলা প্রশাসক) কাছ থেকে চাহিদা পাওয়ার পর নির্মাণ করে দেওয়া হবে।’ ইতোমধ্যে ৪৪ হাজার ১০৮টি ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুর্যোগ সহনীয় ঘর ৩০ হাজার ১৮২টি। ৭ এপ্রিলের মধ্যে এসব ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দপত্রে বেশ কয়েকটি শর্ত রয়েছে। সেগুলো হলো- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন প্রকল্প থেকে জারি করা নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হবে, ঘর নির্মাণে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের অনুকূলে দুই শতাংশ খাস জমির ব্যবস্থা করে একক গৃহনির্মাণ কাজ করতে হবে, আশ্রায়ন-২ প্রকল্প থেকে অনুমোদিত নকশা ও প্রাক্কলন অনুযায়ী মানসম্মত নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে টেকসই দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ সম্পন্ন করতে হবে, এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ‘মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ঘর দেওয়া নীতিমালা-২০২০’ অনুসরণ করতে হবে। শর্তের মধ্যে আরও রয়েছে- নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ না হলে প্রকল্প বাতিল করা এবং দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বরাদ্দ হওয়া অর্থ ফেরত নেওয়াসহ প্রচলিত আইন ও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রচলিত নিয়মে প্রকল্প কাজের ভাউচার বা মাস্টার রোল নিরীক্ষার জন্য যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পরিদর্শন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘নতুন করে ঘর দেওয়ার লক্ষ্যে সারাদেশে কাজ চলছে।’ প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি ঘরের জন্য পরিবহন খরচসহ এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এবার তা বাড়িয়ে এক লাখ ৯৫ হাজার টাকা থেকে এক লাখ ৯৭ হাজার টাকা করা হয়েছে। এ বিষয়ে উপ-প্রকল্প পরিচালক (উপ-সচিব) মো. জাহেদুর রহমান বলেন, আগে দেওয়া ঘরগুলোতে রান্না ঘরের পেছনে দরজা ছিল না। এবার দরজা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ঘরের ঠিক পেছনে একটি জানালাও বাড়ানো হয়েছে। এজন্য ঘরপ্রতি ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ঘর নির্মাণের সময় গুণগত মান নিশ্চিত করতে কোনো আপস করা যাবে না। কাঠ, টিন, ইট, বালু ও সিমেন্টের গুণগত মান নিশ্চিত করে ঘর নির্মাণে ব্যবহার করতে হবে। জমির মালিকানা রয়েছে এমন কেউ চলমান গৃহ প্রদান কার্যক্রমের আওতায় যাতে না ঢুকতে পারে, সেজন্য কঠোর নজরদারির কথা বলা হয়েছে চিঠিতে। এ বিষয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই আমাদের টিম যাচ্ছে, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘কোনো অনিয়ম আমরা সহ্য করব না। যখন যেখানে তথ্য আসে, আমরা টিম পাঠাই। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। তবে অনিয়মের সংখ্যা খুবই কম।’ |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |