বৃদ্ধাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন : গৃহকর্মী রেখা স্বামীসহ ৮ দিনের রিমান্ডে
নিজস্ব প্রতিবেদক
|
![]() বৃদ্ধাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন : গৃহকর্মী রেখা স্বামীসহ ৮ দিনের রিমান্ডে রাজধানীর মালিবাগে ফাঁকা বাসায় সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধাকে নির্যাতন করে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গৃহকর্মী রেখা আক্তার ও তার স্বামী ফরহাদ এরশাদের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের দশদিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদ উর রহমান প্রত্যেকের আটদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড আবেদনে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, আসামি রেখা মামলার বাদী মেহেবুবার বাসায় দীর্ঘদিন যাবৎ কাজের মেয়ে হিসেবে কাজ করে আসছেন। আসামি রেখা ও তার স্বামী পরিকল্পনা করে বাসা ফাঁকা থাকার সুবাদে গত ১৮ জানুয়ারি সকালে বাদীর মা বিলকিস বেগমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে গুরুতর জখম করে। এ সময় ২৪ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ দুই লাখ টাকা এবং একটি টেলিভিশন চুরি করে নিয়ে যায়। এ মামলার ঘটনা অত্যন্ত লোমহর্ষক ও চাঞ্চল্যকর। মামলার ভিকটিম বিলকিস বেগম (৭৫) গুরুতর মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। তিনি আরও বলেন, আসামিদের কাছ থেকে আংশিক চোরাই মালামাল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ইলেট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত ও ভাইরাল হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, অবশিষ্ট চোরাই মালামাল উদ্ধার এবং মামলার মূল রহস্য উদঘাটন ও সংঘবদ্ধ চক্রের অপরাপর চোরদলের সদস্যদের ধরতে অভিযান পরিচালনার জন্য আসামিদের দশ দিনের পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা একান্ত প্রয়োজন। গত সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর মালিবাগে সত্তরোর্ধ্ব এক গৃহকর্ত্রীকে বিবস্ত্র করে নির্মম নির্যাতনের পর স্বর্ণালংকার ও টাকা লুটের সেই দৃশ্য ধরা পরে বাসার সিসি ক্যামেরায়। এতে দেখা যায়, বছর তিনেক ধরে কিডনিসহ নানা সমস্যায় ভোগা ৭৫ বছর বয়স্ক বৃদ্ধা বিলকিস বেগম শুয়ে আছেন বিছানায়। পরম যত্নে তার সেবা করছেন গৃহকর্মী রেখা। একটু পরেই বৃদ্ধাকে বিবস্ত্র করে জোর করে বাথরুমে ঢোকান রেখা। শীতের সকালে বৃদ্ধার গায়ে ঢালা হয় ঠান্ডা পানি। পরে লাঠি দিয়েই বৃদ্ধা গৃহকর্ত্রীকে মারতে শুরু করেন গৃহকর্মী রেখা। একের পর এক আঘাতে বৃদ্ধা মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও থামেননি রেখা। একপর্যায়ে হাতের কাছে যা পেয়েছেন তা দিয়েই চালিয়েছেন নির্যাতন। আলমারির চাবির জন্য বুকের ওপর পা তুলে দেন রেখা। বঁটি হাতেও তেড়ে যান। একসময় অসহায়ের মতো আত্মসমর্পণ করেন বৃদ্ধা। গলা থেকে চেইন খুলে নিজের গলায় পরে নেন রেখা। হাতের বালাও পরেন। চাবি দিয়ে আলমারি খুলতে ব্যর্থ হন রেখা। তার পরই অসুস্থ বৃদ্ধাকে টেনে নিয়ে বাধ্য করেন আলমারি খুলে দিতে। ড্রয়ার খুলে স্বর্ণ, টাকা ও মোবাইল ফোন নিজের কব্জায় নেন রেখা। সবকিছু ব্যাগে ভরে বৃদ্ধাকে বাসায় তালা মেরে দেন রেখা। পরে বাসার গেট খুলে ব্যাগসহ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। ঘটনার পর ২০ জানুয়ারি ভোরে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল ও বালিয়াডাঙ্গি থানার সীমান্তবর্তী কাশিপুর এলাকা থেকে রেখাকে গ্রেফতার করা হয়।
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |