দিল্লি অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিন্নাতুন বাকিয়ার মৃত্যু
চিকিৎসায় অবহেলায় স্ত্রীর মৃত্যু, মোদির কাছে সাংবাদিক ফারাজীর অভিযোগ
ডেস্ক রিপোর্ট
|
![]() চিকিৎসায় অবহেলায় স্ত্রীর মৃত্যু, মোদির কাছে সাংবাদিক ফারাজীর অভিযোগ দিল্লি অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ত্রী জিন্নাতুন বাকিয়ার (৫৮) মৃত্যু। কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন সার্জন ডা. ভিজি রাজকুমারীর বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে লিখিত অভিযোগ বাংলাদেশের সিনিয়র সাংবাদিক ফারাজী আজমল হোসেনের দিল্লি অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ত্রী জিন্নাতুন বাকিয়ার (৫৮) মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন সার্জন ডা. ভিজি রাজকুমারীর বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন বাংলাদেশের সিনিয়র সাংবাদিক ফারাজী আজমল হোসেন। সাংবাদিক ফারাজী তার অভিযোগে বলেছেন, চিকিৎসক ডা. ভিজি রাজকুমারীর চরম অবহেলা, উদাসীনতা এবং অপেশাদার সুলভ আচরণের কারণেই জিন্নাতুনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়াসহ ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন সাংবাদিক ফারাজী আজমল। বাংলাদেশের দৈনিক ইত্তেফাকের পলিটিক্যাল এডিটর ফারাজী আজমল অভিযোগে বলেন…………. ১) তার অসুস্থ স্ত্রী জিন্নাতুন বাকিয়ার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য ২২ অক্টোবর ডা. ভিজি রাজকুমারীর তত্ত্বাবধানে দিল্লি অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২) কিন্তু ভর্তির পর রাতেই জিন্নাতুন বাকিয়াকে নয়ডা অ্যাপোলো হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় এবং ডা. ভিজি সেখানেই তার কিডনী ট্রান্সপ্ল্যান্ট করেন। ৩) কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টে শেষে ওই রাতে তাকে দিল্লি অ্যাপোলো হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। ৪) ২৮ অক্টোবর জিন্নাতুন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পান। ৫) এর মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু রুটিন পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গেলে ১১ নভেম্বর তার স্ত্রীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। ৬) বাড়িতে চিকিৎসা চলাকালে ২০ নভেম্বর তার স্ত্রীর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে অ্যাপোলো হাসপাতালের করোনা আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ৭) চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রুটিন পরীক্ষার সময় হাসপাতালেই জিন্নাতুন বাকিয়া করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন। ৮) কারণ অপারেশনের আগে দিল্লি অ্যাপোলো হাসপাতালে আমার স্ত্রীর করোনা পরীক্ষা করা হয় এবং সেখানে ফলাফল নেগেটিভ আসে। ৯) এদিকে হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক বিভাগে আমার স্ত্রীর মতো গুরুতর রোগীর জন্য রক্তের নমুনা সংগ্রহ বা অন্যান্য পরীক্ষার জন্য বিশেষ অথবা পৃথক কোনও ব্যবস্থা ছিলো না। ১০) সেখানকার পরিবেশ মোটেই স্বাস্থ্যকর ছিলো না এবং সাধারণ রোগীদের সঙ্গে তাকে লাইনে অপেক্ষা করতে হয়েছিলো। ১১) স্ত্রীর সংকটাপন্ন অবস্থায় কোনও নির্দেশনা না দিয়েই চেন্নাই সফরে চলে যান ডা. রাজকুমারী। ১২) পরে এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করলে ওই চিকিৎসক দিল্লিতে ফিরতে বাধ্য হন। ১৪) ফিরেই রোগীর সেবায় চরম অবহেলা ও উদাসীনতা দেখান। ১৫) রোগীর স্বজনদের অসহযোগিতাসহ ব্যক্তিগত আক্রমণ করা শুরু করেন। ১৬) অপেশাদার ও অসৌজন্যমূলক আচরণের শিকার হতে হয় তার স্ত্রীকে। ১৭) তাছাড়া দোভাষী না থাকায় কর্মচারী ও নার্সদের সহযোগিতাও ছিলে না। ১৮) চিকিৎসকের এমন ব্যবহারে আজমলের স্ত্রীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। ১৯) প্রতিস্থাপিত কিডনিতেও দেখা দেয় সমস্যা। ২০) ফলে ৯ ডিসেম্বর স্ত্রীকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ২১) এই সময় ডা. রাজকুমারী পাশেও থাকেননি। ২২) এমনকি কোনও ধরণের সহায়তাও করেননি। ২৩) এই পরিস্থিতিতে ১১ ডিসেম্বর মারা যান জিন্নাতুন। সাংবাদিক ফারাজী আরও অভিযোগ করেন………………… ১) চিকিৎসার আগে ১৮ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হলেও স্ত্রীর মৃত্যুর পর ৩৩ লাখ টাকা বিল দাবি করা হয়। ২) এর মধ্যে ডা. রাজকুমারীর ব্যক্তিগত সচিব দ্রুত চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য ৩৩ হাজার টাকা ঘুষও নেন। ৩) পরে স্ত্রীর মৃত্যুতে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ করলে সাংবাদিক আজমলকে হুমকি দেন ডা. রাজকুমারী। এদিকে ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ওই হাসপাতালের ভাইস চেয়ারম্যানকে লিখিত এ অভিযোগ দেওয়া হয়। তিনি উত্তর না দিয়ে মেডিকেল ডিরেক্টরের কাছে আমার অভিযোগটি পাঠিয়ে দেন,যিনি নিজেই এই অভিযোগে দুষ্ট। একই সঙ্গে অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়াসহ ক্ষতিপূরণ দাবি করে ১৯ ডিসেম্বর দিল্লি মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. গিরিশ ত্যাগীর কাছেও একটি লিখিত অভিযোগ পাঠানো হয়। কিন্তু টাকা ফেরত এবং ক্ষতিপূরণ সম্পর্কে দিল্লি অ্যাপোলো হাসপাতাল কোনও উপযুক্ত পদক্ষেপ করেনি। এমনকি জান্নাতুল বাকিয়ার ফাইলটি ফিরিয়ে দেয়নি যেখানে রোগীর নিজের লেখা কিছু নোট ছিলো। অবহেলায় স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে দাবি করে সাংবাদিক আজমল চিকিৎসা বিষয়ে হাসপাতালে দেয়া সব টাকা ফেরত চেয়েছেন। সেই সঙ্গে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও অনুরোধ করেছেন। এছাড়া সাংবাদিক আজমল ভারতেের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন…………… ১) আমি পেশায় সাংবাদিক এবং বাংলাদেশের প্রাচীনতম পত্রিকা ডেইলি ইত্তেফাকের সঙ্গে ৪৭ বছর ধরে কলম সৈনিক হিসাবে কাজ করে যাচ্ছি। ২) এছাড়া কর্মজীবনে ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের প্রচারে কাজ করছি। ৩) ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনের কার্যালয় এটি সম্পর্কে ভালভাবে অবহিত। দিল্লি অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এর আগে সাংবাদিক ফারাজী আজমল হোসেন ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। স্ট্যাটাসে ডা. ভিজি রাজকুমারীর চরম অবহেলা, উদাসীনতার কারণেই তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। একইভাবে তিনি দিল্লি অ্যাপোলো হাসপাতালসহ ভারতের ৪৫টি হাসপাতাল পরিচালনাকারী রেড্ডি পরিবারের ব্যবসায়ী স্বার্থপরতা ও লোভ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ জার্নালে খবরও প্রকাশ করেছে। |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |