বাংলাদেশের দ্বীপ জেলা ভোলা। ‘কুইন আইল্যান্ড অব বাংলাদেশ’ নামে ভূষিত এই ভূখণ্ড। এ জেলার আয়তন ৩,৪০৩.৪৮ বর্গ কিলোমিটার। সাতটি উপজেলার মধ্যে চরফ্যাশন উপজেলা সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা বোরহানউদ্দিন।
দ্বীপটিতে নদী—নালা, খাল—বিল, কৃষক—মাটি, বন—জঙ্গল, পশু—পাখি ও স্নেহ—মমতা—ভালবাসা ঘিরে রেখেছে প্রকৃতির ডানা। ভোর বেলা দু’মুটো পান্তা খেয়ে শুরু হয় দিনের পথ চলা। মাটির সাথে মিশে থাকা এই মানুষগুলোর চিত্র সাজানো হয় প্রকৃতির সাথে। খেত খামার ফসল মাটি শস্য মাছ নদী ও সাগরের সাথে জড়িত এই দ্বীপের মানুষ। প্রকৃতি খেলা করছে ভোলার মানুষকে ঘীরে। কখনো ঝরের সাথে আবার কখনো মহামারির সাথে এই দ্বীপের মানুষ যুদ্ধ করে চলেছে।
নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই ভোলা জেলা একসময় ছিলো নোয়াখালী জেলার অধীনে। ১৮৪৫ সালে ভোলা মহকুমায় রূপান্তর হয়। দৌলতখানের আমানিয়া ছিলো তখন এর প্রশাসনিক কেন্দ্র। ১৮৬৯ সালে মহকুমাটি বরিশালের সঙ্গে যুক্ত হয়। তখন দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন হাট নামক দুটি থানা এবং তালতলি, গাজীপুর ও তজুমদ্দিন নামক তিনটি আউটপোস্ট নিয়ে এই মহকুমা গঠিত হয়। ১৮৭৬ সালে দৌলতখান থেকে ভোলায় মহকুমা সদর স্থানান্তরিত হয়। ভোলা পৌরসভা গঠিত হয় ১৯২০ সালে। ১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এটিকে জেলায় উন্নীত করা হয়। ভোলা জেলায় রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। যা দেখতে প্রতিনিয়িত ছুটে আসছেন ভ্রমণপিপাসুরা।
এই জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে— জ্যাকব টাওয়ার, বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্মৃতি জাদুঘর, স্বাধীনতা জাদুঘর, চরফ্যাশন ‘খামার বাড়ি’, চর কুকরী—মুকরী, মনপুরা দ্বীপ, ঢাল চর, নিজাম হাসিনা মসজিদ, মহিষের টক দই ও প্রাচীনতম স্থাপনা বিদ্যা সুন্দরীর দিঘী।
জ্যাকব টাওয়ার
জ্যাকব টাওয়ার ভোলা জেলার চরফ্যাশনে অবস্থিত। এটি উপমহাদেশের সর্বোচ্চ ওয়াচ টাওয়ার। আইফেল টাওয়ারের আদলে নির্মিত ১৬তলা বিশিষ্ট এই ওয়াচ টাওয়ারে প্রতিটি তলায় ৫০ জন ও পুরো টাওয়ারে ৫০০ জন দর্শক অবস্থান করতে পারেন। দৃষ্টিনন্দন এই টাওয়ারে সিঁড়ি দিয়ে চূড়ায় উঠার পাশাপাশি ১৬ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন স্বচ্ছ গ্লাসের ক্যাপসুল লিফট। ২২৫ ফুট উচ্চতার এই টাওয়ার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে আকর্ষণীয় ও উঁচু টাওয়ার। সম্পূর্ন স্টিল কাঠামোতে তৈরি এই টাওয়ার ৮ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয়। টাওয়ারের চারদিকে ব্যবহার করা হয়েছে স্বচ্ছ গ্লাস। বাইনোকুলারের সাহায্যে ১০০ বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত টাওয়ারের চতুর্দিকের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন ভ্রমণপিপাসুরা।
বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্মৃতি জাদুঘর
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গকারী এক সাহসী বীর যোদ্ধার নাম মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল। তিনি ১৯৪৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভোলার দৌলতখান উপজেলার পশ্চিম হাজীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার চাকরির সুবাদে সেনানিবাসে কেটেছে দুঃসাহসী মোস্তফা কামালের শৈশব জীবনের বেশিরভাগ সময়। ২০ বছর বয়সে সেনা সদস্য হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে উঠা মোস্তফা কামাল পাকিস্তানের চতুর্থ ইস্ট—বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে ইস্ট—বেঙ্গল রেজিমেন্টের হয়ে যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধের সময় তাকে মৌখিকভাবে ল্যান্স নায়েকের দ্বায়িত্ব দেয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় সম্মুখ যুদ্ধে এই বীর সন্তান পাকিস্তানি হানাদার বাহিনির হাতে শাহাদাৎ বরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় তাকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি দেওয়া হয়।
এই বীর মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং স্মৃতি রক্ষার্থে ২০০৮ সালে ভোলা জেলা শহর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে আলীনগর ইউনিয়নের মোস্তফা নগরে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়। আর মৌটুপীর গ্রামের নাম পরিবর্তন করে কামাল নগর রাখা হয়েছে। জাদুঘরে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন, বীরশ্রেষ্ঠর ব্যবহৃত সামগ্রী, ছবি এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ধারক বিভিন্ন গ্রন্থ স্থান পেয়েছে। এছাড়া লাইব্রেরীতে আরো আছে বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের জীবনী, উপন্যাস, ধর্মীয় গ্রন্থ, বিজ্ঞান বিষয়ক রচনাবলী, সাধারণ জ্ঞান, শিশুসাহিত্য, কবিতাসমগ্রসহ নানান ধরনের বৈচিত্র্যময় বইয়ের সমৃদ্ধ সংগ্রহ।
স্বাধীনতা জাদুঘর
তরুণ প্রজন্মকে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে অবগত করার উদ্দেশ্যে ভোলার বাংলাবাজার এলাকায় তোফায়েল আহমেদ ট্রাস্টি বোর্ডের উদ্যোগে স্বাধীনতা জাদুঘর গড়ে তোলা হয়েছে। স্বনামধন্য স্থপতি ফেরদৌস আহমেদ প্রায় এক একর জায়গার উপর নির্মিত ভোলার আকর্ষণীয় এই বিনোদন কেন্দ্রটি ডিজাইন করেন। স্বাধীনতা জাদুঘরে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ সালের ছাত্র আন্দোলন, ৬৬ সালের ছয় দফা, ৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ৭০ সালের নির্বাচন এবং ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সম্পূর্ণ ইতিহাস সংরক্ষিত আছে। এছাড়া এখানে তথ্যভিত্তিক ভিডিও এবং দুর্লভ ছবির সংগ্রহ দেখে বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের সুযোগ রয়েছে।
স্বাধীনতা জাদুঘরের প্রথম তলায় রয়েছে বঙ্গভঙ্গ, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, দেশ ভাগ ও ৫২—এর ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার ধারাবাহিক ইতিহাস। দ্বিতীয় তলায় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে রয়েছে। আর তৃতীয় তলায় আছে স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস।
ফাতেমা খানম মসজিদ
ভোলায় দৃষ্টিনন্দন আরেক দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে ফাতেমা খানম মসজিদ। স্বাধীনতা জাদুঘরের একদম পাশেই এই মসজিদটি অবস্থিত। প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে এক একর জমির ওপর নির্মিত মসজিদটি খুবই দৃষ্টিনন্দন। আধুনিক স্থাপত্যরীতি ও ইসলামি সংস্কৃতিতে পরিপূর্ণ এ মসজিদ। বিভিন্ন ধরনের পাথর ও টাইলস দিয়ে সুসজ্জিত। মসজিদের ভেতর দৃষ্টিনন্দন ঝাড়বাতি লাগানো। মসজিদে প্রধান একটি বড় গম্বুজসহ চারপাশে চারটি ছোট গম্বুজ রয়েছে। এখানে একসঙ্গে আড়াই হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের মূল গেট থেকে মসজিদ পর্যন্ত সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত।
চরফ্যাশন ‘খামার বাড়ি’
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান ‘খামার বাড়ি’। প্রতিদিন হাজারো মানুষ দূর—দুরান্ত থেকে এখানে ঘুরতে আসেন। বাহারি প্রজাতির গাছ আর ফুলের সমারোহ পুরো এলাকা জুড়ে। মনোমুগ্ধকর এ জায়গাটি দর্শনার্থীদের মন কেড়ে নিয়েছে। চরফ্যাশন উপজেলা সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার দুরে নজরুল নগর ইউনিয়নের ‘শারেক খালি’ গ্রামে এ দর্শনীয় স্থানটি অবস্থিত। খামার বাড়ি বা মেসার্স জেনিক ফিসারিজ নামের এ দর্শনীয় স্থানটি পর্যটকদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ৫০ একর এলাকা নিয়ে এ দর্শনীয় স্থানটির অবস্থান। পুরো এরিয়ার যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই যেন নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ঘেরা। চারদিকে শুধু নজরকড়া মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। যা দেখতে ছুটে আসেন ভ্রমনপিপাসুরা। ভোলা—৪ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন। ভোলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবে এর সুনাম এখন জেলার বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে।
খামার বাড়িতে ঘোড়া, হরিণ, বাঘ—সিংহ, কুমির, হাঁস, জিরাফসহ অসংখ্য বৈচিত্র্যময় প্রাণী ও জীব বৈচিত্র্যের আদলে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। আছে ২টি মিনি হ্যালিপেড। পাহাড়ের আদলে নির্মাণ করা হয়েছে সু—উচ্চ আধুনিক কিল্লা, যেখানে ছাতার নিচে বসে সময় কাটায় ভ্রমনপিপাসুরা।
চর কুকরী—মুকরী
বাংলাদেশের একমাত্র দ্বীপ জেলা ভোলার মূল ভূখণ্ড থেকে দক্ষিণে মেঘনা নদী পার হয়ে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি চর কুকরী—মুকরীর অবস্থান। দ্বীপের পূর্বদিকে প্রমত্তা মেঘনা উত্তরে বুড়া গৌড়াঙ্গ এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। চর কুকরী—মুকরীকে মিনি সুন্দরবনও বলা হয়ে থাকে। ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল, বন্যপ্রাণী আর সমুদ্রসৈকতকে ঘিরে সৌন্দর্যের এক বর্ণিল উপস্থিতি— যা প্রকৃতি প্রেমিক পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকে।
প্রায় এক হাজার বছর পুরনো এ চরে আজও সভ্যতার ছোঁয়া লাগেনি। বঙ্গোপসাগরের কোলে মেঘনা—তেঁতুলিয়ার মোহনায় প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা বিশাল বনাঞ্চল বেষ্টিত এ দ্বীপে বিচরণ করছে অসংখ্য হরিণ, গরু—মহিষ, বানর এবং নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী। চর কুকরীতে যাওয়ার পথে বিস্তৃত বনায়ন মাঝে—মধ্যে চিতাবাঘেরও উপস্থিতি টের পাওয়া যায় এ দ্বীপকন্যার বুকে।
মনপুরা দ্বীপ
মনপুরা দ্বীপ বাংলাদেশের ভোলা জেলার অন্তর্গত একটি বিচ্ছিন্ন ভূমি। এ দ্বীপের পূর্ব, পশ্চিম এবং উত্তর দিকে মেঘনা নদী প্রবাহমান আর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। মনপুরা দ্বীপ থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার বিরল সুযোগ রয়েছে।
এছাড়া এই দ্বীপে আছে হরিণের অভয়াশ্রম। মেঘনা নদীর ৫০০ মিটার ভেতরে মনপুরা ল্যান্ডিং স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত স্থানীয়রা ও পর্যটকরা এখানে সময় কাটাতে আসেন। দ্বীপের হরিণগুলো জোয়ারের সময় প্রধান সড়কের খুব কাছে চলে আসে। মাঝে মাঝে হরিণের পালের রাস্তা পার হবার জন্য বাইক থামিয়ে অপেক্ষা করতে হয়। এছাড়া এই দ্বীপে চৌধুরী প্রজেক্ট নামে একটি মাছের ঘের আছে। বিশাল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত পুকুর ও লেকের পাড় জুড়ে সারিসারি নারিকেল গাছ; একটা বিকেল কাটানোর জন্য বেশ মোহনীয়। সাইক্লিং এবং ক্যাম্পিং করার জন্য মনপুরা দ্বীপ একটি আদর্শ জায়গা।
ঢাল চর
প্রকৃতির রুক্ষতা যেখানে নির্মল সৌন্দর্যের আরেক কারণ, তেমনই এক চরের নাম ‘ঢাল চর’। এই চরের একটি প্রান্তকে তারুয়া সমুদ্র সৈকতও বলা হয়। চরের বিচিত্র প্রাণী, গাছপালা আর মাটির ভিন্নতা দেখলে মুগ্ধ হওয়া ছাড়া উপায় নেই। গত কিছু বছরের প্রাকৃতিক দুর্যোগ এই চরকে আরো নির্জন করেছে। এই দ্বীপে আছে হরিণ, বন মোরগ, শিয়াল, লাল কাঁকড়া এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। লবণাক্ত বনাঞ্চল, কাছাকাছি স্থানের মাটির চারিত্রিক পার্থক্য, মরা গাছের শুকনো গুড়িগুলো যেন ফসিল—এর (মৃত প্রাণী বা উদ্ভিদের অংশবিশেষ পাথরে পরিণত হওয়া এমন ধরনের বস্তুকে বোঝায়) মতো মনে হয় আর ভেজা গুড়িগুলোকে মনে হয় প্রবাল পাথর। যারা ছবি তুলতে পছন্দ করেন তাদের জন্যে তো এক অনন্য স্থান। ক্যাম্প করে থাকার জন্য অনেক সুন্দর একটা যায়গা এই ‘ঢাল চর’।
নিজাম হাসিনা মসজিদ
বাংলাদেশের একমাত্র দ্বীপ জেলা ভোলায় নির্মাণ করা হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ অত্যাধুনিক মসজিদ নিজাম হাসিনা মসজিদ। ভোলা শহরের উকিল পাড়া নামক স্থানে প্রায় দেড় একর জমির উপর দ্বিতল এই মসজিদটি স্থাপন করেছে নিজাম—হাসিনা ফাউন্ডেশন। দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ সম্বলিত অপূর্ব এই নিজাম হাসিনা মসজিদ নির্মাণে বিভিন্ন রঙয়ের মার্বেল পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। নিজাম হাসিনা মসজিদে রয়েছে পুরুষ ও নারীদের জন্য পৃথক অজুখানা এবং নামাজের আদায়ের স্থান। এই মসজিদে প্রায় দুই হাজার মুসল্লির একত্রে নামায আদায়ের সুযোগ রয়েছে। নিজাম হাসিনা মসজিদে ৬০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট একটি গম্বুজ রয়েছে। আর মসজিদে স্থাপিত মিনারের উচ্চতা ১২০ ফুট। ক্যালিগ্রাফি, আকর্ষণীয় ফোয়ারা এবং সাজানো ফুলের বাগান মসজিদের সৌন্দর্যকে আরো বহুগুণ বাড়িয়ে তোলেছে।
মহিষের দই
দ্বীপ জেলার ভোলার ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত মহিষের দুধের কাঁচা দধি। এটা ভোলার প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্য বহন করে। এখানকার অতিথি আপ্যায়নের অন্যতম উপাদন এটি। এই টক দধি গুড়, মিষ্টি অথবা চিনি দিয়ে খাওয়া যায়। এই দধি সব সামাজিক, পারিবারিক ও ঘরোয়া ভোজে থাকতেই হবে। এছাড়া খাবার হজমে কাঁচা দুধের দধি বাড়তি সহায়তা করায় এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। স্থানীয়রা খাবারের শেষে ভাতের সঙ্গে দই খায়। দই—চিড়ার সঙ্গে হালকা মুড়ি ও চিনি মিশিয়ে মজা করে খাওয়া যায়। গরমের মৌসুমে দইয়ের সঙ্গে হালকা পানি ও চিনি মিশিয়ে ঘোল তৈরি করা হয়। এ ঘোল গরমের দিনে মানবদেহকে ঠাণ্ডা রাখে। অনেকে কুটুম বাড়িসহ দূর—দূরান্তের পছন্দের মানুষের উপহার কিংবা দেশের বাইরেও প্রিয়জনদের কাছে এখানকার দধি পাঠান অনেকে। মহিষের এই টক দইয়ে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিনসহ অন্যান্য উপদান রয়েছে, যা মানব দেহের জন্য অনেক উপকারী বটে।
/এমএ/